রাখাইন বিদ্রোহীদের পেতে রাখা বিস্ফোরণে উড়ে গেছে পায়ের গোড়ালির অংশ

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইনে আহত বন্যহাতির  চিকিৎসা দিচ্ছন বন বিভাগ

প্রকাশ: ১২ আগস্ট, ২০২৫ ০৫:৫৬

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভয়াবহ এক ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে একটি বন্যহাতি। স্থলমাইনের বিস্ফোরণে হাতিটির ডান পায়ের গোড়ালির বড় অংশ উড়ে গেছে। আহত হাতিটির অবস্থা দেখে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাখাইন বিদ্রোহীরা সীমান্ত এলাকায় পেতে রাখা মাইনেই হাতিটি আহত হয়েছে।

হাতিটি প্রথমে উপজেলার চাকঢালার চেরারমাঠ এলাকার ঐট্টাইল্যাঝিরিতে অবস্থান করছিল। খবর পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক সরকার ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি জানান, হাতিটি গভীর ক্ষতের যন্ত্রণায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়ও নড়াচড়া করতে পারছিল না; পায়ের গোড়ালির মাংস ও হাড়ের বড় অংশ উড়ে গেছে।

প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, খাদ্যের সন্ধানে হাতিটি মিয়ানমারের ভেতরে প্রবেশ করেছিল। সেখানে পেতে রাখা স্থলমাইনে পা দেওয়ার পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে আহত হয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে ফিরে আসে।

ঘটনার খবর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে ১২ আগস্ট সকালে কক্সবাজারের দোলাহাজারা সাফারি পার্কের পশু চিকিৎসক ডা. জুরকার নাইন চিকিৎসক দল নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে আসেন। তবে চিকিৎসা শুরুর আগে হাতিটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর হামিদিয়া পাড়া নদীর তীরে হাতিটিকে পাওয়া যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ক্ষতস্থানে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।

ডা. জুরকার নাইন বলেন, “আঘাত মারাত্মক হলেও আপাতত সংক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ক্ষত শুকাতে সময় লাগবে, হাতিটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।”

স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘর্ষ বেড়েছে। রাখাইন বিদ্রোহী ও মিয়ানমারের সেনারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক পুঁতে রাখছে। এতে শুধু মানুষ নয়, সীমান্তের বন্যপ্রাণীরাও বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।

প্রাণীপ্রেমী ও পরিবেশবিদদের মতে, সীমান্তে বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা এবং মাইন অপসারণে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ জরুরি। পাশাপাশি আহত হাতিটির দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করাও প্রয়োজন।

নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগ জানিয়েছে, এ বিষয়ে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।