আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাইশারী এলাকায় গর্জই খালের ভাঙন রোধে ব্যতিক্রমী ও মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল আলম। সরকারি কোনো সহযোগিতা না থাকায় যখন স্থানীয়রা অসহায় হয়ে পড়েছিলেন, তখন তিনি নিজ উদ্যোগে শুরু করেছেন খালের পাড়ে একটি শক্তিশালী বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ।

স্থানীয়ভাবে পরিচিত গর্জই খাল বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। প্রবল স্রোত ও ভাঙনের কারণে প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ে দক্ষিণ বাইশারী এলাকার ঘরবাড়ি, কৃষিজমি ও একমাত্র চলাচলের রাস্তা। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী ভাঙনের কবলে পড়লেও এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মিত হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে রফিকুল আলম ব্যক্তি উদ্যোগে বাঁধ নির্মাণের কাজে হাত দেন। গাছের খুঁটি, বাঁশ, কাঠ ও স্থানীয় উপকরণ দিয়ে মাটি ভরাটসহ সীমিত সরঞ্জাম নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী যুবকের সহযোগিতায় দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন, শুধুমাত্র মানুষের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ করার প্রত্যয়ে।

তিনি বলেন, “এই বেড়িবাঁধটি আসলে সরকারি উদ্যোগেই হওয়ার কথা ছিল। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই আমি নিজেই উদ্যোগ নিয়েছি, কারণ আশপাশের ঘরবাড়ি ও রাস্তাটি রক্ষা না হলে হাজারো মানুষ ক্ষতির মুখে পড়বে।”

স্থানীয় বাসিন্দারাও জানান, এ বেড়িবাঁধ নির্মিত হলে শুধু ভাঙনই রোধ হবে না, বর্ষায় যে দুর্ভোগে পড়তে হয়, তা থেকেও মুক্তি মিলবে। তাদের মতে, রফিকুল আলমের এমন উদ্যোগ সত্যিই অনুকরণীয়। সরকারের সহায়তা পেলে এই বাঁধ আরও মজবুত ও স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা সম্ভব।

সরকারি সহায়তা পৌঁছানোর আগেই একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার আত্মত্যাগী প্রচেষ্টা আবারও প্রমাণ করলো—ইচ্ছা ও দায়িত্ববোধ থাকলে অনেক কিছুই সম্ভব।

উপসংহারে বলা যায়, এই বেড়িবাঁধ শুধু একটি খালের স্রোত ঠেকানোর প্রয়াস নয়; এটি এক মানবিক গল্প—দায়িত্ববোধ, উদ্যোগ ও ভালোবাসার বাস্তব অনুশীলন। এলাকাবাসী চান, সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন যেন দ্রুত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় এবং এই উদ্যোগকে টেকসই করে দক্ষিণ বাইশারীকে গর্জই খালের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করে।