আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সংঘটিত এক চাঞ্চল্যকর অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসঙ্গে নিহতের মরদেহ ও লুট করা মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (২২ জুলাই ২০২৫) বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার, পিপিএম (বার)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ নূর এবং প্রধান অভিযুক্ত ইছমাইল একসময় বন্ধু ছিলেন। ইছমাইলের কাছ থেকে নেওয়া ৭০ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। সালিশে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করা হলেও ক্ষুব্ধ হয়ে ইছমাইল প্রতিশোধমূলক হত্যার পরিকল্পনা করে।
গত ১৮ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে ইছমাইল টাকার কথা বলে সৈয়দ নূরকে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে সীমান্তবর্তী গহীন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার স্ত্রীকে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। পরে পরিবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠালেও সৈয়দ নূরকে হত্যা করে তার লাশ পাহাড়ি খাদে ফেলে দেওয়া হয়।
পরদিন ভিকটিমের পরিবার নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি অপহরণ মামলা (নং-১১, তারিখ: ১৯/০৭/২০২৫) দায়ের করে। পুলিশের যৌথ অভিযানে ২১ জুলাই ঘুমধুম আজুখাইয়া এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত ইছমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রহমত উল্লাহ নামে আরেক আসামিকে আটক করা হয় এবং ডুলুবুনিয়া পাহাড়ি খাদ থেকে সৈয়দ নূরের মরদেহ ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের অংশ হিসেবে তৃতীয় সহযোগী আলী হোসেন ওরফে মুনিয়াকেও উখিয়ার কুতুপালং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে, ইছমাইল ভিকটিমকে হত্যা করতে দুজন ভাড়াটে রোহিঙ্গা অপরাধী ব্যবহার করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সৈয়দ নূরকে ডেকে এনে মারধরের পর গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত কেউই পার পাবে না। হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, বর্বর এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে দ্রুত অভিযানে পুলিশের সফলতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয় জনগণ।
