সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ, বান্দরবান:

বান্দরবানের আলীকদমে ঘুরতে এসে নিখোঁজ হওয়া ফেনীর যুবক হাসান চৌধুরী শুভকে নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। নিখোঁজের ১৩ দিন পার হলেও এখনো তার কোনো সন্ধান মেলেনি। সবাই এক প্রশ্নেই শঙ্কিত-কোথায় গেলেন শুভ?

জানা গেছে, গত ৮ জুন ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ নামের একটি অনলাইন ট্রাভেল গ্রুপের ৩৩ সদস্যের দল আলীকদমে বেড়াতে আসে। ৯ জুন অতিবৃষ্টির মধ্যে তারা তৈন খালের শামুকঝিরি এলাকায় ঝর্ণা দেখতে যান। ফেরার পথে হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে তিনজন ভেসে যান। এরপর ১২ ও ১৩ জুন জুবাইরুল ইসলাম (২৭) ও স্মৃতি আক্তার (১৭) নামের দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ নেই হাসান চৌধুরী শুভ’র, যিনি ফেনী সদর উপজেলার মোহাম্মদ আলীবাজার এলাকার বাসিন্দা।

ঘটনার পর ১৩ দিন পার হলেও পরিবারের সদস্যদের চোখে পানি আর মনে শঙ্কা। তার স্বজনরা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় নিজেরাও টানা তিনদিন উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন, কিন্তু কোনো ফল মেলেনি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক গাইড জানান, নিখোঁজ শুভ ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ গ্রুপের এডমিন বর্ষা ইসলামের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি বলেন, “শুভ ছিলো সাহসী ও চতুর। আমি নিজ চোখে দুজন পর্যটকের বিবস্ত্র মরদেহ দেখেছি এবং তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিলো। সেই থেকে শুভর নিখোঁজ হওয়াটা সন্দেহজনক বলে মনে করছি।”

তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ সাধারণ ডায়েরি করেনি বলে জানিয়েছেন আলীকদম থানার ডিউটি অফিসার এএসআই রায়ানা আক্তার। তিনি বলেন, “২২ জুন পর্যন্ত শুভর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।”

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভকে নিয়ে নানা গুজব ও বিতর্ক ছড়িয়েছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, তিনি জীবিত আছেন—ফেসবুকে এমন কিছু ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টও ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন বলেন, “শুভ এখনও নিখোঁজ। তাকে খুঁজে পেতে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস একযোগে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।”

আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, “নিখোঁজ পর্যটককে উদ্ধারে সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের অনুসন্ধান দল ও পুলিশের টিম এখনও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।”

নিখোঁজ হাসান চৌধুরী শুভ’র সন্ধানে প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে, তবে এখনো প্রশ্ন রয়ে গেছে-তিনি কোথায়?