মো. আরকান, পেকুয়া:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী দুই যুবক-যুবতীর নিঃশব্দ প্রেমের সম্পর্ক পূর্ণতা পেয়েছে বিয়ের বন্ধনে। সমাজের সব বাধা অতিক্রম করে তাদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেন পেকুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আহছান উল্লাহ।

বর মোহাম্মদ জাহেদ উল্লাহ (৩৬) পেকুয়ার পূর্ব মেহেরনামার মো. ছৈয়দ উল্লাহর ছেলে এবং কনে সুমাইয়া জন্নাত (২১) উজানটিয়া ইউনিয়নের ছমিউদ্দিনপাড়ার সিরাজুল করিমের মেয়ে। দু’জনেই জন্মগতভাবে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। তবে নিঃশব্দ ভাষায় গড়ে ওঠা ভালোবাসা থেমে থাকেনি প্রতিবন্ধকতার কাছে।

অসচ্ছল পরিবার থেকে আসা এই জুটির বিয়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেন আহছান উল্লাহ। তিনি শুধু মধ্যস্থতাই নয়, বিয়ের সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন ও আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনাও করেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে ধর্মীয় রীতিনীতিতে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। দেনমোহর ধার্য করা হয় এক লাখ টাকা। বিয়ের পর নবদম্পতি বরপক্ষের বাড়িতে ফিরে আসেন।

আহছান উল্লাহ বলেন, “এই বিয়ের সব দায়িত্ব মানবিক কারণে নিয়েছি। বিয়ের পর নবদম্পতির জন্য একটি বসবাসযোগ্য ঘর নির্মাণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।”

বরের বাবা আবেগভরে বলেন, “আমার ছেলের মনের ভাষা বোঝা একসময় কঠিন ছিল। আজ সে নতুন জীবনে পা দিয়েছে। এর সব কৃতিত্ব আহছান উল্লাহর।”

পেকুয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি কামরান জাদিদ মুকুট বলেন, “এই ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ সমাজের বিত্তবানদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। প্রতিবন্ধীরাও সুযোগ পেলে সমাজের সম্পদ হতে পারে।”

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেয়। আহছান উল্লাহ নিঃসন্দেহে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।”