গরুর মাংস বিতরণ, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও দুর্গম এলাকায় মানবিক সহায়তা—আনন্দ-ভরা ঈদ উপহার

বান্দরবানের পাহাড়ি জনপদে দরিদ্রদের ঈদ আনন্দে রঙ ছড়াল আলহাজ্ব সামশুল হক ফাউন্ডেশন

প্রকাশ: ১৩ জুন, ২০২৫ ১২:১১ , আপডেট: ১৩ জুন, ২০২৫ ১২:১১

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি:

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি জনপদে অসহায় ও দরিদ্র পরিবারগুলোর মুখে হাসি ফুটিয়েছে আলহাজ্ব সামশুল হক ফাউন্ডেশন এবং উত্তর আমেরিকান মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ সংস্থা “নাহার”। ঈদের দিন, শনিবার (৭ জুন) বাইশারী মডেল নূরানী এবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গরুর কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয় স্থানীয় অসহায় পরিবার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের মধ্যে।

চলতি বছর গরুর অতিরিক্ত দামের কারণে কোরবানির সংখ্যা ছিল তুলনামূলকভাবে কম। বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানি জানান, “কোরবানির মাংস পেয়ে এলাকার কর্মহীন ও হতদরিদ্র মানুষগুলো অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছে।” তিনি এ মহতী উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আলহাজ্ব সামশুল হক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি ও সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, সমাজসেবক শামশুল আলম, জালাল আহমেদ এবং ছব্বির আহমেদ।

ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, “দুর্গম এলাকায় ঈদের সময় গরুর মাংস পৌঁছে দিতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। শুধু বাংলাদেশেই নয়, গাজার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাতেও আমরা নভেম্বর ২০২৪ থেকে খাবার, পানি, সৌরবিদ্যুৎ, মসজিদ নির্মাণসহ মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “এবার ঈদুল আজহায় গাজার নির্যাতিত মানুষদের মাঝেও আমরা কোরবানির মাংস পৌঁছাতে পেরেছি। আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া আদায় করছি।”

বান্দরবানের বাইশারী ছাড়াও ঠাকুরগাঁও, সাতক্ষীরা, ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় কোরবানির মাংস বিতরণ করে ফাউন্ডেশন।

অনেক সুবিধাভোগীই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ৮০ বছর বয়সী নওমুসলিম আবু আবদুল্লাহ বলেন, “এই ফাউন্ডেশনের সহায়তা না পেলে হয়তো গরুর মাংস চোখেও দেখতাম না।” বিধবা মাবিয়া খাতুন, আয়মনা বেগম ও কুলসুম বেগমদের চোখে ছিল কৃতজ্ঞতার অশ্রু। তারা জানান, বহু বছর পর ঈদের দিনে গরুর মাংস খাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

কাগজিখোলা আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রিদুয়ানুল হক বলেন, “এলাকার মানুষ বছরের অধিকাংশ সময় গরুর মাংস খেতে পারে না। এই কোরবানির মাংস পেয়ে ঈদের আনন্দ বহুগুণে বেড়েছে। আলহাজ্ব সামশুল হক ফাউন্ডেশন কাগজিখোলায় একটি জামে মসজিদও নির্মাণ করেছে- এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”

এই মানবিক সহায়তার অনন্য দৃষ্টান্ত বাংলাদেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চান আয়োজকরা।