পাহাড়কন্যা খ্যাত বান্দরবান আবারও মুখর হচ্ছে প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকদের পদচারণায়। সবুজ-নীল দিগন্ত, সাঙ্গু নদীর স্বচ্ছ জলরাশি, জীবন্ত পাহাড়ি জীববৈচিত্র্য আর রাতের আড্ডায় ক্যাম্পফায়ারের উত্তাপে জেগে উঠেছে পাহাড়ি জীবন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গ্রামে রাতযাপন—সব মিলিয়ে পর্যটকদের জন্য এটি এক অবর্ণনীয় অভিজ্ঞতা হয়ে উঠছে।

এই প্রাণচাঞ্চল্যের পেছনে রয়েছে প্রশাসনের সদ্য নেওয়া সিদ্ধান্ত। দীর্ঘ ১৫ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার পর্যটন এলাকায় ভ্রমণে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ জুন) থেকে এ দুই উপজেলায় পর্যটকদের চলাচলে আর কোনো বাধা থাকছে না।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে বলা হয়, জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির ৩ জুনের সভার সিদ্ধান্ত এবং বান্দরবান সেনানিবাসের ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের সুপারিশ অনুযায়ী রুমা উপজেলার রুমা বাজার থেকে বগালেক (মুনলাইপাড়া) পর্যন্ত এবং থানচি থেকে মদক ও তিন্দুমুখ পর্যন্ত পর্যটন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এর ফলে এখন বান্দরবানের সাতটি উপজেলার সব পর্যটন স্পটই দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

প্রসঙ্গত, সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় যৌথবাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ থেকে রুমা ও থানচি এলাকায় পর্যটক প্রবেশে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

দীর্ঘদিন পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। অনেকেই মনে করছেন, এ সিদ্ধান্তে বান্দরবানের পর্যটন খাতে নতুন করে প্রাণ ফিরে আসবে।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, “রুমা ও থানচির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সেনাবাহিনীর সুপারিশ অনুযায়ী পর্যটকদের জন্য এলাকা উন্মুক্ত করা হয়েছে। তবে অনুমোদিত এলাকার বাইরে কাউকে যেতে দেওয়া হবে না।”

তিনি আরও বলেন, “পর্যটকদের জন্য নিরাপদ ও স্মরণীয় ভ্রমণ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য জেলার নাগরিকদের বান্দরবান ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ রইল।”

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, বর্ষার সবুজে ঘেরা বান্দরবানে আবারও ভ্রমণপ্রেমীদের ভিড় জমবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।