নিজস্ব প্রতিবেদক:
রামুর কচ্ছপিয়ায় প্রশাসনের অনুমতি তোয়াক্কা না করে আওয়ামী লীগ নেতার নামে চলমান ফুটবল টুর্ণামেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদ জাহিদ রাতুলের নেতৃত্বে প্রশাসন খেলার মাঠে গিয়ে স্থগিতাদেশ সম্বলিত নোটিশ টাঙিয়ে দেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল বলেন, প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে টুর্নামেন্ট চলছে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে টুর্ণামেন্টের সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জয়নাল আবেদীনের নামে গত শনিবার (৩ মে) থেকে বিতর্কিত এই টুর্ণামেন্ট চলে আসছে।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীনের নামে গত কয়েক বছর থেকে টুর্নামেন্ট পরিচালিত হয়ে আসছে। যে টুর্নামেন্ট বাস্তবায়ন কমিটিতে স্থানীয় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারাই রয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতার পালা বদলে এরা কৌশল বদলায়। টুর্নামেন্ট নিরাপদ করতে স্থানীয় কিছু বিএনপির নেতাকে ম্যানেজ করেছে।
টুর্নামেন্টে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলামকে চেয়ারম্যান এবং ছাত্রলীগ নেতা রিপন শিকদারকে সদস্য সচিব করা হয়।
অবশ্যই পরে তৌহিদুল ইসলাম ‘অপ্রীতিকর ঘটনা’র আশঙ্কা দেখিয়ে টুর্নামেন্টের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে আসেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রশাসন ম্যানেজ করা থেকে শুরু করে পুরো টুর্নামেন্ট নিয়ন্ত্রণ করেন রামু উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ইমাদ সিকদার। জুলাই বিপ্লবে কক্সবাজার শহরে সংঘটিত প্রথম হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। তাছাড়া রামুর পূর্বাঞ্চলে তার নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কচ্ছপিয়ার মত বিএনপি অধ্যুষিত একটি জনপদে আওয়ামী লীগ নেতার নামে টুর্নামেন্ট পরিচালনায় এলাকায় ব্যাপক বিতর্ক উঠে। ব্যাপক সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ। তাদের মুরব্বী দল স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশে আন্দোলন চলমান। ঠিক এমন সময়ে স্বৈরাচারদের নেতৃত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতায় ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনা করায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে।
অবশেষে আওয়ামী লীগ নেতার নামে চলমান এই টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল উপজেলা প্রশাসন।
সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।