সংবাদদাতা:
রামু উপজেলার কচ্ছপিয়ায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ নেতার নামে চলছে ফুটবল টুর্নামেন্ট। গত ৩ মে আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করা হয়। জুলাই বিপ্লবের পরে আওয়ামী লীগ নেতার নামে এই টুর্নামেন্ট কিভাবে অনুষ্ঠিত হয়, প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
তবে এতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের দুর্বলতাকে দায়ী করছেন অনেকে।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীনের নামে গত কয়েক বছর থেকে টুর্নামেন্ট পরিচালিত হয়ে আসছে। যে টুর্নামেন্ট বাস্তবায়ন কমিটিতে স্থানীয় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারাই রয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতার পালা বদলে এরা কৌশল বদলায়। টুর্নামেন্ট নিরাপদ করতে স্থানীয় কিছু বিএনপির নেতাকে ম্যানেজ করেছে।
টুর্নামেন্টে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলামকে চেয়ারম্যান এবং ছাত্রলীগ নেতা রিপন শিকদারকে সদস্য সচিব করা হয়।
অবশ্যই পরে তৌহিদুল ইসলাম ‘অপ্রীতিকর ঘটনা’র আশঙ্কা দেখিয়ে টুর্নামেন্টের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে আসেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রশাসন ম্যানেজ করা থেকে শুরু করে পুরো টুর্নামেন্ট নিয়ন্ত্রণ করেন রামু উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ইমাদ সিকদার। জুলাই বিপ্লবে কক্সবাজার শহরে সংঘটিত প্রথম হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। তাছাড়া রামুর পূর্বাঞ্চলে তার নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কচ্ছপিয়ার মত বিএনপি অধ্যুষিত একটি জনপদে আওয়ামী লীগ নেতার নামে টুর্নামেন্ট কিভাবে চলে, প্রশ্ন বিএনপি’র তৃণমূলের।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ। তাদের মুরব্বী দল স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশে আন্দোলন চলমান। ঠিক এমন সময়ে স্বৈরাচারদের নেতৃত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতায় ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনাকে প্রশাসনিক দুর্বলতা ভাবছে এলাকাবাসী। এজন্য রামু উপজেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বশর বাবু বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের নেতৃত্বে বিতর্কিত টুর্নামেন্ট আমরা বর্জন করেছি।
গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে আওয়ামী লীগের এই নেতার নামে কিভাবে টুর্নামেন্ট চলে? এতে প্রশাসনে দুর্বলতা রয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, পলাতক এমপি কমলের অন্যতম অর্থ যোগানদাতা জয়নাল আবেদীন। বিগত ১৭ বছর চালিয়ে গেছেন নানা অপকর্ম।
জুলাই বিপ্লবে কক্সবাজার শহরে তিনি অস্ত্র সরবরাহ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে রামু থানার ওসি ইমন কান্তি চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা জয়নাল আবেদীনের নামে টুর্নামেন্টের কোন অনুমোদন নাই। এতে আইনশৃঙ্খল বিঘ্ন ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম বলেন, কচ্ছপিয়ায় কোন টুর্ণামেন্টের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।