হ্যাপী করিম, মহেশখালী;

কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নের মারাক্কা ঘোনা পশ্চিমপাড়া এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন দুই সন্তানের জননী শারমিন আকতার। স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (১০ মার্চ) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। শারমিনের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে স্বামী নাজিম উদ্দীন শারমিনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। সেহরির জন্য ঘুম থেকে ওঠার পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুচ্ছ বিষয়ে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে নাজিম ক্ষিপ্ত হয়ে শারমিনকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে শারমিন ঘরের ভেতরে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

খবর পেয়ে মহেশখালী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইছার হামিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শারমিনের পরিবারের এক সদস্য জানান, এটি প্রথমবার নয়, নাজিম প্রায়ই শারমিনকে মারধর করতেন। তবে পারিবারিক সম্মান আর সন্তানদের কথা ভেবে তিনি কখনো মুখ খুলতে পারেননি। তার দুই শিশুসন্তান এখনো জানে না যে তাদের মা আর ফিরবে না। শারমিনের মা বিলাপ করে বলছিলেন, ‘মেয়েটাকে কতবার বলেছি, তোর সুখ নাই, চলে আয়, তোর জন্য দরজা খোলা। কিন্তু সে বলত, আমার বাচ্চাগুলার কী হবে? এখন তো সব শেষ!’

মহেশখালী থানার এসআই মজিবুর রহমান জানান, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার পর মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি এবং ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মহেশখালী থানা পুলিশ।