নুরুল আলম সাঈদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;
বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ফের স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশি গুরুতর আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে পণ্য ও গবাদিপশু আনতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণের শিকার হন তরিক উদ্দিন (১৮)। এতে তার বাঁ-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে মিয়ানমার সংলগ্ন ফুলতলী সীমান্তের শূন্যরেখায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা পুঁতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরিত হয়। আহত তরিক উদ্দিন রামু উপজেলার মহিষকুম গ্রামের আহমদ রশিদের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, তরিক উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন চোরাচালানের উদ্দেশ্যে সীমান্তের ৪৮নং পিলারের কাছে গেলে হঠাৎ বিকট শব্দে মাইন বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় তরিক উদ্দিন গুরুতর আহত হন। তার সঙ্গে থাকা লোকজন তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, “মাইন বিস্ফোরণে তরিক উদ্দিন নামের একজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। যেহেতু এটি সীমান্ত এলাকা, বিষয়টি বিজিবি দেখছে।”
স্থানীয়রা জানান, সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের জন্য জ্বালানি ও বিভিন্ন পণ্য পাচার বাড়ছে। বিশেষ করে নাইক্ষ্যংছড়ি ও গর্জনিয়া বাজার থেকে পণ্য পাচারের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ও অবৈধ গবাদিপশু প্রবেশ করছে।
প্রতিদিন নাইক্ষ্যংছড়ির ফুলতলী, আশারতলী, জামছড়ি, চাকঢালা, লেমুছড়ি, ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে লাখ লাখ টাকার পণ্য পাচার হচ্ছে। এ কাজে কিছু রাজনৈতিক নেতাকর্মী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এক বিজিবি কর্মকর্তা জানান, “স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততার কারণে চোরাকারবারিরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠছে। এখন তারা নতুন সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।”
নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির সূত্রে জানা গেছে, বিজিবির কড়া নজরদারির কারণে চোরাকারবারিরা প্রধান রুট ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিকল্প পথ বেছে নিচ্ছে। এতে তারা মাইন বিস্ফোরণের শিকার হচ্ছে।
বিজিবি জানায়, “সীমান্ত সুরক্ষায় আমরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছি এবং ভবিষ্যতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।”
উল্লেখ্য, ২৪ জানুয়ারি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আলী হোছেন (৩৭) ও মো. আরিফ উল্লাহ (৩৫) নামে দুই বাংলাদেশি আহত হন।
