সিবিএন ডেস্ক ;

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হেলথ কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা আহত যোদ্ধা নরসিংদী ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী ইফাত হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমুর হাতে হেলথ কার্ড তুলে দেন।

ইফাত ১৯ জুলাই নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। বর্তমানে তিনি একটি চোখে দেখতে পান না। অন্যদিকে, ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত ইসরাত বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহতদের মধ্যে প্রতিটি জেলায় পর্যায়ক্রমে হেলথ কার্ড বিতরণ করা হবে।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর খায়ের আহমেদ চৌধুরী জানান, এখন পর্যন্ত চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ১০৭৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৯ জনের দুই চোখ চিরতরে নষ্ট হয়েছে, আর ৪৫০ জনের এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৬৫০টি অপারেশন হয়েছে, যার মধ্যে তিনশর বেশি রেটিনা সার্জারি।

চীন, ফ্রান্স, নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা চক্ষু ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করে চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ পর্যন্ত ৬৫ জন রোগীর চোখ পুরোপুরি ভালো হয়েছে।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল (নিটোর) জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে ২১ জনের হাত বা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

হেলথ কার্ডের উদ্বোধনকালে প্রফেসর ইউনূস বলেন, “এই হেলথ কার্ড থাকা মানে যেকোনো সময় সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যাবে।” তিনি আরও বলেন, “আহত যোদ্ধাদের মানসিক ও সামাজিক পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। তারা যেন আনন্দময় জীবনযাপন করতে পারে, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, সম্পাদক সারজিস আলমসহ আরও অনেকে।