সিবিএন ডেস্ক:
উৎপাদন শুরুর দুই দিন পর দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত দেশের অন্যতম উৎপাদনশীল কয়লা ভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম আবারও বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। এতে উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া খনি থেকে উৎপাদিত কয়লা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছিল চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। পাঁচ বছরের চুক্তি অনুযায়ী, আগামী বছর তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। চুক্তি অনুযায়ী এ সময় উৎপাদন সচল রাখতে ছোট মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা মানছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভারতের পতাকা নামিয়ে সাতরঙা পতাকা উড়াল মণিপুরের শিক্ষার্থীরা
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি ও কয়লার খরচ বেশি হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দুটি ইউনিট বন্ধ ছিল। প্রতিটি ইউনিট সচল রাখতে দুটি করে ইলেক্ট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প প্রয়োজন, যা ওই ইউনিটের জ্বালানী হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম চালু রাখে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকে তৃতীয় ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি নষ্ট থাকায় বিকল্প হিসেবে একটি ইলেক্ট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প দিয়ে চলছিল। ফলে মাঝে মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হতো।
সর্বশেষ চলতি মাসের ৭ তারিখ মেরামতের মাধ্যমে ইউনিটটি চালু করা হলে, দুদিনের মাথায় সোমবার সকালে আবারও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হয়নি।
উল্লেখ্য, তৃতীয় ইউনিট থেকে বর্তমানে উৎপাদিত ১৯০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল। এটি চালু রাখতে প্রতিদিন দুই হাজার ৩০০ মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন।
বড়পুকুরিয়ার তিনটি ইউনিটের মধ্যে ২ নম্বর ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। গেল মাসে তৃতীয় ইউনিট বন্ধ হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেড়ে গেছে। ইউনিট দুটি উৎপাদনে না থাকায় পার্বতীপুর উপজেলাসহ উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে চরম বিঘ্ন ঘটেছে। এর ফলে ঘন ঘন লোডশেডিং বেড়েছে এবং জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে তৃতীয় ইউনিট চালুর পরপরই ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিট এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। এই ইউনিটে প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ চলছে। ১ নম্বর ইউনিট থেকে উৎপাদিত ৬০-৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লার খরচ বেশি হচ্ছে।
ময়মনসিংহের ডিসি হলেন কক্সবাজারের কৃতি সন্তান মুফিদুল আলম
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে দৈনিক প্রায় চার হাজার মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহ করা হয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট চালু রেখে স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ৫ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। তবে, এর আগে তিনটি ইউনিট একই সঙ্গে চালানো সম্ভব হয়নি।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, চীন থেকে নতুন মেশিন নিয়ে আসলে উৎপাদন শুরু করা যাবে। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। বিকল্প যন্ত্রাংশ দিয়ে এতদিন এই ইউনিট চালানো হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা ৬ মিনিটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামত করা হয়। এরপর বেলা ১১টার দিকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় কার্যক্রম।
আরও খবর পেতে যুক্ত থাকুন কক্সবাজার নিউজ এর সাথে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।