মিথ্যা অভিযোগে কথিত সংবাদ সম্মেলন এবং এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ সম্পর্কে মহেশখালী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ শরীফ বাদশার বক্তব্য

শনিবার (৭ আগস্ট) কক্সবাজার প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। যা নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদ, আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যে সব বক্তব্য উপস্থাপন হয়ে তা আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে। আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আমার বিরুদ্ধে যে সব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন। যার পক্ষে কোন প্রমাণ পত্র তারা দিতে পারবেন না। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এসংক্রান্ত কিছু বক্তব্য গণমাধ্যম ভাইয়ের উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যটি পাঠ করেছেন অ্যাডভোকেট তুহিন নামের একজন আইনজীবী। যার সাথে আমার কোন প্রকার সম্পর্ক বা শত্রুতা নেই। তিনি কি কারণে আমার বিরুদ্ধে লিখিত বক্তব্যটি উপস্থাপন করেন আমি জ্ঞাত নই। তবে সঠিক তথ্য ছাড়া আমার বিরুদ্ধে লিখিত বক্তব্য পাঠকারি আইনজীবী বিভিন্ন হত্যা মামলা ও অস্ত্র মামলার আসামিদেরকে সহযোগিতা করতে পেশাগত কারণে এটি করেছেন বলে আমার মনে হচ্ছে।

আমি ইয়াবা বা মাদকের সাথে কোন সম্পৃক্ত নেই। আমার জীবনের শুরু থেকে এপর্যন্ত অস্ত্র চোরাচালানের সাথে কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিলাম না। মুলত ইতোপূর্বে মহেশখালীর আলোচিত ওসমান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি যার সরাসরি গুলির আঘাতে ওসমান খুন হয়েছে এমপি আশেকের এপিএস এহসানের হাতে। মৃত ওসমান আমার ফুফাতো ভাই হিসেবে ওসমান হত্যার বাদী তার পিতা আবুল হাশেমকে মামলার ব্যাপারে সহযোগিতা করলে এমপি আশেক খুনি এহসানকে বাঁচানোর জন্য সকল আসামীর সাথে গোপন বৈঠক করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মানহানি ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনসহ তাদেরকে আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে।

বেলাল হোসেন, পিতা- আবুল কাশেম (সাং- বড় মহেশখালীর শুকরিয়াপাড়া) সেই ওসমান হত্যার ২০ নম্বর আসামি এবং দ্রুত বিচার মামলার ৭ নম্বর আসামী। দ্রুত বিচারের বাদী আব্দুল গফুর আমার আপন ছোট ভাই। সে মামলায়ও আমি পরিচালনা করি। সেজন্য আসামি চক্র সবাই মিলে আমার সাথে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বলতে গেলে সে আমান ও এহসান গ্রুপের একজন অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের সদস্য। ওসমানকে হত্যা করার পর আমান ও এহসান গ্রুপ আরো শক্তিশালী হওয়ার জন্য বেলালকে দিয়ে মিয়ানমার থেকে আনা জি-৩ নামের একটি রাইফেল ও অনেকগুলো গুলি নিয়ে ওসমান হত্যার ২০ নম্বর আসামি ও দ্রুত মামলার ৭ নম্বর আসামি বেলাল হোসেন টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। ধরা পড়ার পর এমপি আশেক উল্লাহ তার নিজস্ব লোক পাঠিয়ে টেকনাফ থানায় ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে অস্ত্র পাচারকারী বেলালকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে যায়। বেলালকে ১৬৪ ধারা মতে জোরপূর্বক ও অনেক কিছুর লোভ লালসা দেখিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর জন্য জোরপূর্বকভাবে আমার নাম বলতে বাধ্য করেছে বলে জানা যাচ্ছে। অথচ আমি এই ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানিনা। যদিও ১৬৪ ধারার বিষয়টি আইনগতভাবে প্রকাশ হওয়ার কথা না। কিন্তু তাও সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে। এতেই বুঝা যাচ্ছে আমাকে হয়রানি করার জন্য আসামিচক্র দলবেঁধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

বিগত ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে  নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে আমি জয় লাভ করি। তখন থেকে এমপি আশেক এহসানকে সাথে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা ছিল না, এখনো নাই। উল্লেখ্য যে, আব্দুস সমদ হত্যার বাদী আব্দুল মাবুদ ও ফজল করিম হত্যার বাদী ফরিদুল আলমকে তাদের মামলার বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে আমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে তাদেরকে সহযোগিতা করলে সব আসামিরা একত্রিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে এলাকাবাসীর কাছে হেয়প্রতিপন্ন ও আমার সম্মান হানি করার জন্য পলাতক খুনি ওসমান হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি এহসান ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।

আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনকারী মোস্তাক মিয়া ওসমান হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি, হেলাল উদ্দিন সমদ, ফজল হত্যা ও দ্রুত মামলার আসামি, মকসুদ ওসমান হত্যা মামলার ২৭ নম্বর ও দ্রুত মামলার আসামি।

আমার বিরুদ্ধে যেসমস্ত মিথ্যা বানোয়াট, অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসমস্ত ভিত্তিহীন বানোয়াট অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকল সাংবাদিক ভাই ও প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি এরকম মিথ্যা ও কাল্পনিক বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি। পরিশেষে সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

নিবেদক :
আলহাজ্ব মোহাম্মদ শরীফ বাদশা

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান

মহেশখালী উপজেলা, কক্সবাজার।