হাছান মাহমুদ সুজন,কুতুবদিয়া:

সম্প্রতি কোটা সংস্কার নিয়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের এক দফা এক দাবি ও গণ-আন্দোলনের তোপের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা সৃষ্টি হয়। তারই অংশ হিসেবে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় বিভিন্ন স্থানে বাড়ি-ঘরসহ দোকান লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

দুর্গম এই জনপদে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, হামলা, ভাঙচুরসহ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে স্বাভাবিক জীবনের নিরাপত্তায় মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। একইভাবে হত্যা ও অমানবিক নির্যাতনের ভীতি কাটিয়ে পুলিশ সদস্যদের নির্দ্বিধায় কাজে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করছেন তারা। গত কয়েকদিন কর্মবিরতির পর নৌ-বাহিনীর সহযোগিতায় ইতোমধ্যে কুতুবদিয়া থানায় সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

শনিবার (১০-আগস্ট) বিকেলে বিষয়টা নিশ্চিত করে কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম কবির এ প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ছাত্র সমন্বয়কসহ সকলে মিলে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতেছি।

সকাল থেকে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা থানায় যোগদান করতে শুরু করেছে। কাজেই অফিসের সমস্ত কার্যক্রম চলতেছে। তবে সীমিত পরিসরে। থানায় দায়িত্বরত যে সকল পুলিশ সদস্য অনুপস্থিত তারাও সকলেই আসার পথে। খুব দ্রুত আমরা পুরোপুরি কাজে ফিরব। সর্বোপরি সার্বিক সহযোগিতায় নৌ-বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশংসা জানান তিনি।

এদিকে দ্বীপে নৌ-বাহিনীর টহল জোরদার ও থানার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। সড়কগুলোতে পুরোদমে শুরু হয়েছে যানবাহন চলাচল। বেড়েছে মানুষের কর্মব্যস্ততা। মহল্লায় মহল্লায় ছোট-বড় স্টেশনসহ বাজারের দোকানপাট খুলেছে। এতে জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠছে।

কুতুবদিয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার চৌধুরি আল হায়াত মাহমুদ সিবিএনকে জানান, অন্যান্য জায়গার চেয়ে কুতুবদিয়ায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। এখনো পর্যন্ত দু’একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। থানায় ফোর্স দিয়ে সহযোগিতা করেছি যেন পুলিশ সদস্যরা নির্ভয়ে কার্যক্রম শুরু করতে পারে।

তাছাড়া নৌ-বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন টিমে বিভক্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন এলাকায় এবং বাজারে বাজারে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে টহল দিচ্ছে। বিশেষ করে যেখানে জনসমাগম এবং সহিংসতার ঝুঁকি রয়েছে সেখানে নিয়মিত টহল জোরদার করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলে জানান তিনি।