সংবাদদাতা:
কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকায় একজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীকে মারধর করেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নির্মল দেবনাথ। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই টিআই-কে ক্লোজড করার গুঞ্জন শোনা যায়। তবে ঘটনার ৬ দিন পরও বহাল রয়েছেন তিনি।
ক্লোজড এর খবরটি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেন, তাঁকে ক্লোজড নয়, দায়িত্বের পয়েন্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। কলাতলীর ডলফিন মোড় থেকে তাঁকে শহরের ঘুনগাছ তলায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে দুই পৃষ্টার একটি গোপন প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের টেবিলে রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা দাবি করেন। পুলিশ সুপার কর্মস্থলে না থাকায় তিনি বহাল রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এর আগে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৭. ৫১ মিনিটে সংঘঠিত ঘটনার এক মিনিট ২৭ সেকেন্ড ভিডিও পর্যাআলোচনা করে দেখা গেছে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নির্মল দেবনাথ ওই ব্যবসায়ীকে লাথি তাপ্পড় ঘাড়ে আঘাত ও ধাক্কিয়ে পুলিশ বক্সে নিয়ে যান। সেখানেও তাঁকে মারধর করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পরে অন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এই মারধরের ঘটনার ভিডিও বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রায় সময় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) নির্মল দেবনাথ তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকেন। এমনকি ওই সব ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এইরকম আচরনে ক্ষুদ্ধ খোদ ট্রাফিক বিভাগের একাধিক লোকজন।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরীর নজরে আসার পর গত শুক্রবার সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মারধরের শিকার ওই ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীর খোঁজখবর নেন বলে জানা গেছে।
ক্লোজড এর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য রোববার পুনরায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে রোববার সন্ধ্যায় কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের টিআই পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে এই সব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তাঁকে ক্লোজড নয়, পয়েন্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে ওই কর্মকর্তা দাবি করেন, টিআই নির্মল কক্সবাজার ছাড়তে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে।
এদিকে সেমাবার সন্ধ্যায় টিআই নির্মল দেবনাথকে শহরের ঘুনগাছ তলায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জানুয়ারি একই স্থানে পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে ছবি তুলতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মাজহারুলের হাতে লাঞ্ছিত হন দৈনিক সকালের কক্সবাজারের বার্তা সম্পাদক রাশেদুল মজিদ। এসময় সার্জেন্ট মাজহারুল সাংবাদিক রাশেদুল মজিদের মোবাইল ফোন ও পত্রিকার পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। ওই সার্জেন্টের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবুও সেই সাজেন্ট মাজাহারুল এখনো কক্সবাজারের টেকনাফে কর্মরত।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।