ইয়াছির আরাফাত খোকন
সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিনিধি:

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শুধু দেশের মানুষই নয়, প্রবাসীদের মধ্যেও উত্তেজনা উদ্দীপনা বিরাজ করছে। । ডিউটির ফাঁকে অবসরে আড্ডায়, রুমে, অথবা চায়ের আড্ডায় কয়েকজন মিলিত হলেই শুরু হয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে চুলচেরা বিশ্লেষণ। চলছে নানা হিসাবনিকাশ, আলোচনা-সমালোচনা।

লাল সবুজ পতাকা আর বাংলা মায়ের মাটির টান কতটা প্রবল তা প্রতিটা বাঙ্গালী প্রবাসী বুঝে । দেশের চেয়ে উন্নত দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি যতই চাকচিক্যময় হোক না কেন, নিজের দেশের হাজারো সমস্যার কাছে তা অনেক সময় ম্লান হয়ে যায়। কারন নিজের দেশ নিজেরই। এ ভাবনা শুধু বিদেশে অবস্থানকারী বাঙ্গালী নয়, অন্যদেশের নাগরিকদের মাঝেও দেখা যায়। বিদেশের মাটিতে পড়ে থাকলেও প্রবাসীদের মন পড়ে থাকে মা-মাটি আর দেশের আপনজনদের কাছে। এমন প্রবাসী খুব কমই পাওয়া যাবে যে দেশের খবর রাখে না। ।

আসন্ন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সবকিছুই এখন প্রবাসীদের নখদর্পণে। নির্বাচন এবং নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কি ভাবছেন প্রবাসীরা? নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা সাধারণ কোনো ব্যাপার নয়। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথম ও পূর্বশর্ত। তবে নির্বাচন হতে হবে লেবেল প্লেইং ফিল্ড যেখানে সবার জন্য আইন সমান এবং সবাই যাতে ভোট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা প্রার্থী চূড়ান্ত প্রতীক বরাদ্দ সহ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারির ৭ তারিখ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইসতেহার ঘোষনা করেছে। এতে প্রবাসীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি এরকম কোনো কিছুই যুক্তনেই ইসতেহারে এ নিয়ে প্রবাসীরা ক্ষুব্দ।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জোট গতভাবে বিভিন্ন আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, অন্যতম প্রধান জনসম্পৃপ্ত দল ছাড়া নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? শুধু বাংলাদেশের জনগণ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসীদের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপি ছাড়া একটি ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ কীভাবে দেখানো যায় সেটা আওয়ামী লীগের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

ইতিপূর্বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন জাতীয় দলের খেলোয়াড়, শিল্পী, সেলিব্রিটিদেরকে নির্বাচনের নৌকা মার্কার প্রতীক দেয়া হয়েছে। অনেক প্রবাসীরা দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী বা একক ভাবে ভোট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বলছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ৩৭টি দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে নির্বাচন নিয়ে মানুষের উৎফুল্লতা আছে। দেশের মানুষ চায় নির্বাচন হোক প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠন হোক গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক । সাংবিধানিকভাবে সকল দলকে নির্বাচনে থাকা দরকার এবং সংবিধান মেনে নির্বাচন হবে এতে দু একটা দল আসুক বা না আসুক তার জন্য সংবিধানের বাইরে যাওয়া যাবে না সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হবে কেউ আসুক নির্বাচনে বা না আসুক তার জন্য নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে না।

নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ এবং একদলীয় নির্বাচন যেমন প্রশ্নের সম্মুখীন তেমনি বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাটাও গণতন্ত্রের অন্তরায়। নির্বাচন ছাড়া যেমন একটি দল বেশি দিন টিকে না, আবার ভুল নেতৃত্বও দেশ ও দলের সমান ক্ষতি করে বলে জানান প্রবাসীরা।