মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং এ অবস্থানরত বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ তাঁর বিরুদ্ধে করা ভারত সরকারের আপীল মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভারতের শিলংয়ের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সালাহউদ্দিন আহমেদ বেকসুর খালাস দিয়ে এ রায় প্রদান করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ এর প্রেস সচিব ছাফওয়ানুল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর শিলং এর নিম্ন আদালত পাসপোর্ট আইনের ১৪ ধারায় ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আনীত মামলায় সালাহউদ্দিন আহমদকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছিলেন। পরে শিলং এর নিম্ন আদালতের সেই রায়ের বিরুদ্ধে ভারত সরকার শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপীল করে। দীর্ঘদিন আদালতে সেই আপীল মামলা চলার পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নিম্ম আদালতের রায় বহাল রেখে সালাহউদ্দিন আহমদকে বেকসুর খালাস প্রদান করে আপীল মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। রায়ে একইসাথে সালাহউদ্দিন আহমদকে দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক।

২০১৫ সালের ১১ মে থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে আছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। আর তার আগের দুই মাস দেশের ভেতরেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

২০১৫ সালের মার্চে বিএনপি’র তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা যখন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ঐসময়ে তৎকালীন বিএনপি’র মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমদ নিখোঁজ হন। তখন সরকার বিরোধী উত্তাল আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে দলের পক্ষে সাহসী ভূমিকা রাখেন কক্সবাজারের কৃতি সন্তান সালাহউদ্দিন আহমদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে থেকে তখন প্রতিদিন দলের কর্মসূচি ও নেতাকর্মীদের কাছে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা গণমাধ্যমে মাধ্যমে পাঠানোর কঠিন দায়িত্ব পালন করতেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

২০১৫ সালের ১০ মার্চ গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি নম্বর সড়কে ৪৯/বি নম্বর বাড়ির ২/বি নম্বর ফ্ল্যাট থেকে র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সালাহউদ্দিন আহমদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর দুই মাস পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং এ পাওয়া যায়। অজ্ঞাত লোকজন তাঁকে সেখানে রেখে যায়।

সেখান থেকে উদ্ধারের পর সালাহউদ্দিন আহমদ এর বিরুদ্ধে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা দায়ের করা হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর মামলার কার্যক্রম চলার পর ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হয়। ওই বছরের ২৬ অক্টোবর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলা থেকে খালাস পান সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে সরকারপক্ষ নিম্ম আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে।

ছাফওয়ানুল করিম আরো জানান, শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে খালাস পাওয়ার পর সালাহউদ্দিন আহমদ মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া জ্ঞাপন করেন এবং সেখানকার আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যথাসম্ভব দ্রুত দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।