হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :
সেন্টমার্টিনদ্বীপে আবারও শিক্ষকের হাতে ১ শিশু ছাত্র প্রহৃত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের শিকার শিশুটি হচ্ছে সেন্টমার্টিনদ্বীপ বাজারপাড়া ৪নং ওয়ার্ড আবদুল কাদেরের পুত্র মোঃ রিফাত হাসান (৬)। মারধরের শিকার শিশু রিফাত সেন্টমার্টিনদ্বীপ সরকারী প্রাইমারী স্কুলের শিশু শ্রেনীর ছাত্র বলে জানা গেছে। ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে সেন্টমার্টিনদ্বীপ সরকারী প্রাইমারী স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রকে সেন্টমার্টিনদ্বীপে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আহত ছাত্র মোঃ রিফাত হাসানের বড় ভাই মোহাম্মদুল্লাহ রাত ১০টায় ফোনে বলেন ‘আমার ছোট ভাইকে কোন কারণ ছাড়াই স্কুলের সহকারী শিক্ষক নুরুল আলম বেদম মারধর করেন। এতে মোঃ রিফাত হাসান গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে তাকে সেন্টমার্টিনদ্বীপে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জাহাজ চলাচল বন্দ থাকায় টেকনাফে আনা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ এবং টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। গুরুতর আহত হওয়ায় আমার ভাই ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবেনা। বিষয়টি সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ, টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে অবহিত করায় ক্ষীপ্ত হয়ে মোবাইল ফোনে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। তা আমি রেকর্ড করে রেখেছি’।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিক ফোন রিসিভ না করায় এব্যাপারে তথ্য নেয়া সম্ভব হয়নি। সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ এবং টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এমদাদ হোসেন চৌধুরী অভিভাবক কতৃক মৌখিক অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
জানা যায়, এর আগেও স্কুলে কর্মরত মানসিক ভারসাম্যহীন সহকারী শিক্ষক নুরুল আলম কতৃক এধরণের আরও একাধিক বার ঘটনা ঘটিয়েছিল। সমাপণী পরিক্ষার কয়েক দিন আগে উক্ত শিক্ষক অস্বাভাবিক আচরন শুরু করেন। এমননি স্কুলের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে ফেলে। এতে বাধা দিলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিককেও মারধর করে। তাছাড়া ১৬ নভেম্বর বিকালে উক্ত মানসিক ভারসাম্যহীন সহকারী শিক্ষক নুরুল আলম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে খবর দিয়ে পরিক্ষার জন্য অতিরিক্ত ক্লাস করার কথা বলে স্কুলে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যায় ছুটির আগে হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই বেপরোয়াভাবে ৪ জন ছাত্রীকে মারধর করেন। শিক্ষার্থীদের শোর-চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মারধরের শিকার পরিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। উক্ত শিক্ষক গত ২ বছর আগেও একইভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।
টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন ‘মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। এর আগে আরও ৪ জন ছাত্রী সমাপণী পরিক্ষার্থীদের মারধর করার লিখিত অভিযোগ বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। সম্ভাব্য বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল আলমকে ১১ ডিসেম্বর সেন্টমার্টিনদ্বীপ থেকে টেকনাফে চলে আসতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে’।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।