মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজারের প্রবীণ সাংবাদিক, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বিশিষ্ট শিল্পদ্যোক্তা ও রাজনীতিক আলহাজ্ব এ.কে.এম শাহাবুদ্দিনের ১৬ তম মৃত্যূবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার ২৫ জুলাই। ২০০৩ সালের ২৫ জুলাই ভোর সোয়া ৬ টায় তিনি দুনিয়ার মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান। মরহুম এ.কে.এম শাহাবুদ্দীন বিএ ১৯৪৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের মরিচ্যা পালং এর কাঠালিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন মরহুম মাষ্টার লোকমান আহমদ ও মাতা ছিলেন মরহুমা ছালেমা খাতুন।
আলহাজ্ব এ.কে.এম শাহাবুদ্দিন উখিয়ার মরিচ্যা পালং সরকারি প্রাইমারী স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি কক্সবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করেন এবং ১৯৬৯ সালে কক্সবাজার সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৭৩ সালে তিনি গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী অর্জন করেন। আলহাজ্ব শাহাবুদ্দিন এসএসসি পাশের পরই ১৯৬৪ সালে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী প্রিপ্যারেটরী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সেখানে শিক্ষকতা শুরু করেন। এর আগে ১৯৬১ সাল থেকে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। এসময় তিনি তৎকালীন বহুল প্রচারিত দৈনিক পয়গাম ও পরে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি সারা জীবন সাংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ও সাংবাদিক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি কক্সবাজার প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজন। কক্সবাজার সাংবাদিকদের একটা ঠিকানা খুঁজার জন্য তিনি সমমনা সকল সাংবাদিকদের নিয়ে কক্সবাজার প্রেসক্লাব গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
আলহাজ্ব এ.কে.এম শাহাবুদ্দিন তৎকালীন ইষ্ট পাকিস্তান কো-অপারেটিভ ইন্সুরেন্স কোং লিঃ ও জীবন বীমা কর্পোরেশন এর উন্নয়ন কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোং লিঃ এর কক্সবাজার শাখার পরিচালক ছিলেন। লোকমানিয়া রশিদুল উলুম মাদ্রাসা-এতিমখানা ও জামে মসজিদ, মেঘনা সী ফুডস লিঃ, ড্রিমল্যান্ড ওভারসিজ, লায়েন সাং মেরিন প্রোডাক্টস, শাহাব উদ্দিন এন্ড কোং, এয়ার কার্গো এন্ড স্টোরফোম বক্স এজেন্সি, বেসরকারী এনজিও জনউন্নয়ন সংস্থা ও টেকনিক্যাল ট্রেনিং প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৮৩ সালে তিনি পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন।
আলহাজ্ব এ,কে,এম, শাহাবুদ্দিন কক্সবাজার উপকূলীয় সমুদ্র এলাকায় বিপুল সংখ্যায় ধরা পড়ে এরকম মাছ এবং অপ্রচলিত শুটকি মাছ রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, হংকং, চীন, জাপান, ভিয়েতনাম ও স্পেন।
পোঁপা মাছ রপ্তানিতে শ্রেষ্ট রপ্তানীকারক হিসাবে আলহাজ্ব এ.কে.এম. শাহাবুদ্দিন স্পেনের মাদ্রিদ হতে আন্তর্জাতিক এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। এ.কে.এম শাহাবুদ্দিন কক্সবাজারের লিংকরোডস্থ মুহুরীোড়া বাসভবনে মৃত্যকালীন পর্যন্ত বসবাস করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ পুত্র, ৩ কন্যা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।