নিজস্ব প্রতিবেদক:
কোন মামলার ওয়ারেন্ট বা অভিযোগ ছাড়াই আটক করে নিয়ে আসা কক্সবাজার সদরের সেই মা-মেয়েকে মারামারির মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ। এর আগে তাদের প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী ভূমিদস্যু প্রবাসী শফিকুল ইসলামের ভাই আবদুর রহিম বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মারামারি মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন জানান, বছর দেড়েক আগে খরুলিয়া মাস্টারপাড়া এলাকায় বেশকিছু জমি কিনে প্রভাবশালী ভূমিদস্যু শফিকুল ইসলাম। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই পাশর্^বর্তী আবু বক্কর ছিদ্দিক নামে এক ব্যক্তির বসতভিটার উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ভূমিদস্যু শফিকের। আবু বক্কর দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। একারণে তার স্ত্রী সাজেদা খানম সন্তানদের নিয়ে কোন রকম খেয়ে-পরে জীবন যাপন করছেন। নামমাত্র মূল্যে তার ভিটাটি বিক্রি করার জন্য সাজেদা খানমের উপর নানাভাবে হয়রানি শুরু করে ভূমিদস্যু শফিক। কিন্তু একের পর এক প্রস্তাবেও সাজেদা তার বসতভিটা বিক্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করায় পুলিশকে ব্যবহার করে হয়রানি শুরু করে চিহ্নিত ভূমিদস্যু শফিক।

এরই অংশ হিসেবে গত ৪ এপ্রিল সাজেদার বাড়িতে হামলা চালায় ভূমিদস্যুরা। এতে সাজেদার মেয়ে সাবেকুন্নাহারকে শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে ভূমিদস্যুর পক্ষে পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। উল্টো ভুক্তভোগি সাজেদার পরিবারকে হুমকি দিয়ে চলে যায় পুলিশ।

এরপর ১৬ এপ্রিল রাতে ভূমিদস্যু শফিকুল ইসলামের নির্দেশে তার সহযোগী নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে রাতের অন্ধকারে আবারও সাজেদার বসতভিটায় হামলা চালায় ভূমিদস্যুরা। এসময় ভাংচুর চালিয়ে গাছপালা কেটে নিয়ে যায় তারা। দ্রুত বাড়ি ছেড়ে না গেলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

তারা অভিযোগ করেন, এঘটনায় পুলিশ অসহায় ভুক্তভোগিদের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো ভূমিদস্যুর পক্ষ নেন। ভূমিদস্যুর পক্ষে গিয়ে বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকাল তিনটার দিকে সাজেদা খানম (৬০) ও তার মেয়ে সাজিয়া আফরিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় সদর মডেল থানা পুলিশ। কোনো ওয়ারেন্ট এবং অভিযোগ ছাড়াই তাদেরকে আটক করে পরে বুধবার রাতে ভূমিদস্যু শফিকুল ইসলামের ভাই আবদুর রহীম বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মারামারির মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ তাদেরকে কারগারে পাঠিয়েছে।

এবিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন বলেন, আটক মা ও মেয়ের পরিবারের লোকজনের এবং ওই ঘটনার ব্যাপারে আমি খোঁজ নিচ্ছি। বিষয়টি বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে আমি ব্যবস্থা নিবো।’