নিজস্ব প্রতিবেদক :

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সুগন্ধা এলাকায় দুইটি রাস্তা উন্মুক্ত ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত ১৫ অক্টোবর আদালত এই আদেশ দেন (স্মারক নং–১৪০১/২০২৫)।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা নেছার আহমদ ভূঁইয়া বনাম মুয়াজ্জেম হোসেন শাওন গং (এম.আর. মামলা নং–৭০৯/২০২৫) মামলার শুনানিতে প্রথম পক্ষ উপস্থিত ছিলেন, তবে দ্বিতীয় পক্ষ অনুপস্থিত ছিলেন।

নথি ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে দেখা যায়, কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় সী ওয়ার্ল্ড হোটেল হতে দক্ষিণ কলাতলীর ডলফিন চত্বরের পশ্চিম পর্যন্ত ৩০ ফুট প্রশস্ত দুটি রাস্তা রয়েছে। ড্রাগন মার্কেটের দুই পাশ দিয়ে চলা এই রাস্তা সরকারি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে অবস্থিত।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পূর্ব পাশের রাস্তা বিবাদী ত্রিপল টাঙিয়ে দোকানে পরিণত করেছেন এবং পশ্চিম পাশের রাস্তার অর্ধেক অংশ সাইনবোর্ড দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচল ও নির্মাণসামগ্রী পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।

বাদীর বক্তব্য, পুলিশ প্রতিবেদন ও নথি পর্যালোচনায় আদালত নির্দেশ দেন— সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত রাস্তা অবিলম্বে উন্মুক্ত করতে হবে এবং চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে এমন যেকোনো প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করতে হবে। এ বিষয়ে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে সুগন্ধা থেকে কলাতলী পর্যন্ত মোট ৩,১১৬ ফুট দীর্ঘ ও ৮০ ফুট প্রশস্ত সড়কের একটি অংশ দখল করে ‘ড্রাগন মার্কেট’ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সী ওয়ার্ল্ড থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যন্ত এক হাজার ফুট রাস্তা চালু থাকলেও, বাকি প্রায় দুই হাজার ফুট সড়ক এখনো দখল ও অবরুদ্ধ রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দোকানদাররা রাস্তার ওপর ত্রিপল টাঙিয়ে দোকান বসিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে পর্যটন, হোটেল-মোটেল ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দলিল, রাজস্ব রেকর্ড ও সরকারি নকশা অনুযায়ী ড্রাগন মার্কেটের জমি মূলত রাস্তা ও সরকারি খাসজমি, যার কোনো বৈধ বরাদ্দ বা লিজ নেই।

স্থানীয়দের দাবি, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী শাওন রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অবৈধভাবে ওই মার্কেট গড়ে তোলেন।

তবে আদালতের সাম্প্রতিক এই রায় ও দুটি রাস্তা উন্মুক্তের নির্দেশে স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।