সিবিএন ডেস্ক ;

রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পূর্ণ হতে চললেও প্রত্যাবাসন এখনো অনিশ্চিত। মিয়ানমারের রাখাইনে আরকান আর্মি ও জান্তার সংঘাত, আন্তর্জাতিক তহবিল কমে যাওয়া এবং নানা রাজনৈতিক জটিলতায় এই প্রত্যাবাসন আরও দূরবর্তী হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের অধিকার ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দাবিকে সামনে রেখে উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গারা প্রথমবারের মতো অনানুষ্ঠানিক ভোটের মাধ্যমে ৫ জন প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেছেন।

শনিবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রায় এক মাস ধরে ধাপে ধাপে ভোটগ্রহণ শেষে ৫ শত কাউন্সিলরের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচিত হন— ১৫ নং ক্যাম্পের মৌলভি সৈয়দ উল্লাহ, ১৩ নং ক্যাম্পের খিন মং, ১ নং ইস্ট ক্যাম্পের জাহাঙ্গীর আলম, ১ নং ওয়েস্ট ক্যাম্পের মোহাম্মদ শোয়াইফ এবং ১৫ নং ক্যাম্পের সাজেদা বেগম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, রোহিঙ্গাদের একটি নাগরিক সমাজ সংগঠন গঠনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচিতদের মধ্যে প্রথম ছয় মাস সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন মৌলভি সৈয়দ উল্লাহ, পরবর্তী সময়ে অন্যরা পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সৈয়দ উল্লাহ ছিলেন প্রয়াত রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহর সংগঠনের সক্রিয় সদস্য এবং ক্যাম্পে প্রত্যাবাসন দাবির আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়া। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেছি।”

অন্যদিকে, নির্বাচিত নেতা খিন মং বলেন, “আমাদের প্রধান দায়িত্ব হলো আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, ক্যাম্পে শান্তি বজায় রাখা এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।”

নতুন নেতৃত্বকে ঘিরে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহু রোহিঙ্গা তাদের অভিনন্দন জানিয়ে শুভকামনা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও উদ্যোগটিকে স্বাগত জানানো হয়েছে। আরকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল কংগ্রেস এক বিবৃতিতে জানায়, তারা নির্বাচিতদের আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে অংশগ্রহণের প্রত্যাশা করছে।