নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া

চকরিয়া পৌরসভার বাঁশঘাট এলাকায় দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সুদের টাকা নেওয়ার সময় জামানত হিসেবে দেওয়া ব্যাংক চেক কৌশলে ডিজঅনার দেখিয়ে আদালতে মামলা করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তদন্তে বিষয়টি সত্য প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের নির্দেশে মামলার বাদী জুনি আক্তার ও তার স্বামী বেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু হয়েছে।

সোমবার (১১ আগস্ট) আদালতের নির্দেশে চকরিয়া থানায় বাদী জুনি আক্তার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের মামলার বাদী।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আদালতের নির্দেশে দাদন ব্যবসায়ী জুনি আক্তার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।”

আদালত সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া পৌরসভার বাঁশঘাট এলাকার বাসিন্দা লিপি আক্তার (৩৬) তার খালাতো বোন আসমাউল হোসনার অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী জুনি আক্তারের কাছ থেকে সুদের ভিত্তিতে ৩০ হাজার টাকা নেন। মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি ১০ হাজার টাকায় মাসিক সুদ ২ হাজার টাকা—মানে ৩০ হাজার টাকার বিপরীতে প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা সুদ দিতে হতো। এভাবে ১৮ মাসে জুনি আক্তার সুদ হিসেবে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা নেন।

অভিযোগ রয়েছে, ২০২২ সালে টাকা নেওয়ার সময় জামানত হিসেবে লিপি আক্তার নিজের এনআরবিসি ব্যাংকের একটি খালি চেক জমা দেন। কিন্তু ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর জুনি আক্তার ওই খালি চেকে ৫ লাখ টাকা লিখে ডাচ-বাংলা ব্যাংক চকরিয়া শাখায় উপস্থাপন করেন এবং সেটি ডিজঅনার দেখান। পরে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি চেকের মালিক লিপি আক্তারের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা (নং ১৩৫/২৫) দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকরিয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ার উল ইসলাম তদন্তে নিশ্চিত হন যে, বাদী জুনি আক্তার সুদের টাকা পরিশোধ পাওয়ার পরও চেক ফেরত না দিয়ে কৌশলে ডিজঅনার দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। তিনি আদালতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

গত ২৫ জুলাই শুনানিতে আদালত বিবাদী লিপি আক্তারকে অব্যাহতি দিয়ে বাদী জুনি আক্তার ও তার স্বামী বেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা নেওয়ার জন্য চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

চকরিয়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “মামলা রুজুর পর অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।”