এম. মনছুর আলম, চকরিয়া:
প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া যেন এক নিয়মে পরিণত করেছেন বান্দরবানের লামা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈন উদ্দিন। যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা শেষে সরাসরি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়েন তিনি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে শুরু করেন পাঠদান—ঠিক একজন অভিজ্ঞ শিক্ষকের মতোই।
সম্প্রতি তিনি লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি করেন। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, নির্মাণাধীন মসজিদ ও শহীদ মিনারের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান। শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে গল্পের ছলে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে পাঠদান করেন। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশংসার ধারা তৈরি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুফিজুর রহমান জানান, ইউএনও স্যার নির্মাণকাজ পরিদর্শনে এসে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়েন এবং শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও মান যাচাই করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে নানা প্রশ্ন করেন এবং তাদের মেধার মূল্যায়ন করেন। শিক্ষার্থীরা সাধ্যমতো উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে এবং ইউএনও তাদের উত্তরে সন্তুষ্ট হন।
তিনি আরও বলেন, একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার এ ধরনের আগ্রহ ও দায়িত্বশীলতা শিক্ষাক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত। শিক্ষার্থীদের ভাষাজ্ঞান, গণিত এবং আইসিটি বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোর উপদেশও দেন তিনি।
এ বিষয়ে ইউএনও মো. মঈন উদ্দিন বলেন, “বিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। উপজাতি শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজি বোঝার সক্ষমতা কেমন তা জানার চেষ্টা করেছি। তাদের শেখাতে ভালো লাগে। শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার আনন্দই আলাদা। বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে একদিকে যেমন পড়াতে পারি, অন্যদিকে ওই প্রতিষ্ঠানে কোনো সমস্যা আছে কি না তাও সরাসরি দেখতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে শিক্ষার বিকল্প নেই। বর্তমান প্রজন্মকে মেধাভিত্তিক ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতেই আমাদের কাজ করতে হবে।”
