আজিজুর রহমান রাজু :

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকসহ একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে রামু উপজেলার পানিরছড়া এলাকার ভারুয়াখালী রেলক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন: সিএনজি চালক হাবিব উল্লাহ (৫০), যাত্রী রেনু আরা (৪৫), তার শিশু সন্তান আশেক উল্লাহ (৩) এবং কিশোরী আসমাউল হুসনা (১৩)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনের প্রচণ্ড ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং যাত্রীদের মরদেহ বিভিন্ন স্থানে ছিটকে পড়ে। হৃদয়বিদারক এ দৃশ্য দেখে এলাকাবাসীর চোখে পানি আসে।

দুর্ঘটনার পরপরই ক্ষুব্ধ জনতা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী একটি ট্রেন আটকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। একপর্যায়ে ট্রেন লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে ট্রেন মাস্টারসহ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। পরে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, রেলওয়ে পুলিশ, রামু ও ঈদগাঁও থানা পুলিশ এবং উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রায় দুই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পানিরছড়া ভারুয়াখালী রেলক্রসিংয়ে গেইট কিংবা গেইটম্যান নেই। বারবার দুর্ঘটনা ঘটলেও রেল কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দুর্ঘটনার পর দ্রুত গেইট স্থাপন ও গেইটম্যান নিয়োগের দাবি জানান তারা।

রামু থানার ওসি মোহাম্মদ তৈয়বুর রহমান জানান, নিহতরা কক্সবাজার সদরের পানিরছড়া থেকে সিএনজিতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

তবে এক পর্যায়ে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে ‘আতা উল্লাহ’ নামে ৯ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও, পরে তার জীবিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার পরিবার ও পুলিশ। জানা যায়, দুর্ঘটনার আগে তার মা আসমা আরা তাকে ঘোনারপাড়া এলাকার একটি মাদরাসায় নামিয়ে দেন। বিকেলে সে বাড়ি ফিরে আসে।

প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।