সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
মাদানী ছাত্রকল্যাণ পরিষদ বাংলাদেশ কতৃক কক্সবাজার জেলার প্রসিদ্ধ দ্বীনি মারকায জামিয়াতুল ইমাম মুসলিম কক্সবাজারে “ইসলাম ও মুসলমানদের সেবায় মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান”-শীর্ষক বিশেষ সেমিনার ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শায়খ আব্দুল গফুর নদীম, শায়খুল হাদীছ, জামিয়াতুল ইমাম মুসলিম রহ. কক্সবাজার।
প্রধান অতিথির গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন প্রফেসর ডক্টর শায়খ যায়দ বিন মুহাম্মাদ বিন গানিম আল জুহানী, সাবেক অধ্যাপক, আরবী ভাষা অনুষদ, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব।
আরবী প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন
শায়খ মাকসুদুল হক আল মাদানী,
পরিচালক, মারকাযুল উলুম ওয়াল মা’আরিফ, ঢাকা
বাংলা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন,
শায়খ মিসবাহ উদ্দীন মাদানী,
বিভাগীয় প্রধান, আরবী ভাষা ও ইসলামী দাওয়াহ বিভাগ
জামিয়া আরাবিয়া ইসলামিয়া জিরি, পটিয়া, চট্টগ্রাম

গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন
১. শায়খ আফীফ ফুরকান আল মাদানী
– মুহাদ্দিছ, জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল ইসলামিয়া
– দায়ী, মুলহাক দ্বীনী অফিস, সৌদি দূতাবাস, ধর্ম মন্ত্রণালয়।

২. ড. শামসুল আলম আসসাঈদ
-পিএইচডি (তারবিয়্যাহ) মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়।
-প্রতিষ্টাতা ইমাম বুখারী মাদরাসা কানজরপাড়া, কক্সবাজার।

৩. শায়খ মোস্তফা সাইফুদ্দীন আল মাদানী*
– প্রিন্সিপ্যাল, স্কুল অব দ্যা হলি কুরআন, বগুড়া।

৪. শায়খ মুহাম্মদ সাজেদ হাবীব আল মাদানী
-পরিচালক, ইমাম বুখারী মাদরাসা কানজরপাড়া, কক্সবাজার।
-অনুবাদক, কাতার দূতাবাস ঢাকা।

৫. শায়খ মুহাম্মাদুল্লাহ আল মাদানী
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, আল মুনিরা বালিকা মাদ্রাসা সাতলা, উজিরপুর, বরিশাল।
খতিব : বাগিচা জামে মসজিদ খিলগাঁও ঢাকা।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন
ড. মাসুম বিল্লাহ ফিরোজী আল মাদানী
মুহাদ্দিছ ও বিভাগীয় প্রধান, জামিয়াতুল ইমাম মুসলিম রহ. কক্সবাজার
শায়খ শাহাদাত হোসাইন আল মাদানী
পিএইচডি গবেষক, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব।

সেমিনারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রদের অনেকে অংশগ্রহণ করেছেন।

আলোচকবৃন্দ নির্দিষ্ট বিষয়ে আরবী-বাংলায় স্মৃতিচারণ, প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং তথ্য নির্ভর আলোচনা রাখেন।
উল্লেখ্য, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৭০ টি দেশের ছাত্ররা পড়াশোনা করে যার ৯৫% সম্পূর্ণ স্কলার্শিপের ভিত্তিতে। বর্তমান অধ্যায়নরত ছাত্রের সংখ্যা ১৭৮৭৩ জন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই ইসলামী বিদ্যাপীঠ থেকে অধ্যয়ন শেষ করে দেশে ফিরে গিয়েছেন ৯৭,৫৭৮ জন ছাত্র, এর মধ্যে বাংলাদেশী ২০৩২ জন। বর্তমানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্র সংখ্যা ৪৪৮ জন। ইসলাম ও মুসলমানদের সেবায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মদীনা মুনাওয়ারার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল- এই বিশ্ববিদ্যালয় ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়াসহ পৃথিবীর অসংখ্য অমুসলিম যেসকল দেশে মুসলিম সংখ্যালঘু ছাত্ররা উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত তাদেরকে সহজ শর্তে স্কলারশিপ দিয়ে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ করে দেওয়া হয়।

মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় তার ছাত্রদের মধ্যে বহু দক্ষ ও নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলেছে, যাঁরা সমাজে দাওয়াত ইলাল্লাহের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। যেমন মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল কাইয়ুম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মাদ শহীম আলী সাঈদ, মালয়েশিয়ার যুলকিফিল বিন মুহাম্মাদ, সেনেগালের আফ্রিকান ইসলামিক স্টাডিজ কলেজের ডিন মুহাম্মাদ আহমদ লুহ। বাংলাদেশেও মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক গ্রেজুয়েট নীরবে দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, আরবী ভাষায় পাঠদান ও গবেষণাধর্মী বিষয়ে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ড. আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, ড. মনজুর এলাহী, ড. সাইফুল্লাহ মাদানী, ড. হাফেজ এবিএম হিজবুল্লাহ, ড. কুতুবুল ইসলাম নোমানী, ড. মাহফুজুর রহমান, মরহুম রফিকুল্লাহ মাদানী (রহ.), মরহুম শায়খ মোহাম্মদ ইসহাক মাদানী (রহ.), ড. মোস্তফা কামিল মাদানী, ড. শাফী উদ্দীন মাদানী, ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ড. শামসুল আলম আসসাঈদ, শায়খ আফীফ ফুরকান মাদানী, শায়খ এনামুল হক মাদানী, শায়খ মোস্তফা সাইফুদ্দীন মাদানী, শায়খ মুহাম্মদ সাজেদ হাবীব আল-মাদানী, শায়খ মহিউদ্দীন ফারুকী, শায়খ সুফিয়ান আনিস মাদানী, ড. মাসুম বিল্লাহ ফিরোজী প্রমূখ আলেমগণ উল্লেখযোগ্য। প্রাক্তন ছাত্ররা ইসলামী শিক্ষা, আরবী ভাষা পাঠদান, দাওয়াত, সেবা ও গবেষণাধর্মী কার্যক্রম পরিচালনায় উম্মাহর অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়েছেন।
প্রায় ১৭০ টি দেশের মুসলিম ছাত্ররা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিজ নিজ দেশে ফিরে যায় ইসলামী শিক্ষা ও দাওয়াতের মিশন নিয়ে। এভাবে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে এমন আলোকবর্তিকায় যার আলোতে আলোকিত গোটা পৃথিবী। এজন্যই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়- ‘جامعة لا تغيب عنها الشمس’ অর্থাৎ, যার (মানচিত্রে) কখনো সূর্য ডুবে না।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ লক্ষ্য, বিস্তৃত বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পবিত্রতা ও মর্যাদায় দ্বিতীয়তম স্থান, ওহীর ভূমি, হিজরতের নগরী, ইসলামের প্রথম রাজধানী ও মুসলমানদের প্রেমের শহর মদীনাতুর রসূল সা. এ অবস্থান- এসকল বৈশিষ্ট্য তাকে পরিণত করেছে বিশ্বব্যাপী ইসলামী শিক্ষার এক দীপ্তিমান বাতিঘরে। যার উদাহরণ পৃথিবীতে আর নেই।

সৌদি সরকার তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের অনেক মনীষির অনুরোধে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং প্রতিবছর বিশাল রাষ্ট্রীয় বাজেট এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তারা খরচ করে থাকেন।