❝জুলাই বিপ্লবের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, শিক্ষা অধিকার—অনুগ্রহ নয়❞

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

প্রকাশ: ২৪ জুলাই, ২০২৫ ০৪:৫০

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


এম. মনছুর আলম, চকরিয়া:

২০২৫ সালের ঘোষিত প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কেবল সরকারি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ রেখে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের চকরিয়া।

বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় চকরিয়া কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন’-এর আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার শতাধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের সহস্রাধিক শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী অংশ নেন।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা হাতে ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেন—জুলাই বিপ্লবের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই❞, ❝শিক্ষা অধিকার—অনুগ্রহ নয়❞, ❝আমার শিশুর বিচার তার মেধায় চাই❞।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন—সংগঠনের সভাপতি ও চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের, সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান আরিফ এবং চকরিয়া গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন, বৃত্তি পরীক্ষায় কেবল সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিয়ে বেসরকারি বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সংবিধান পরিপন্থী এবং বৈষম্যের প্রতীক। তাঁরা বলেন, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরাও জাতীয় শিক্ষাক্রমে পাঠ গ্রহণ করে, অথচ শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান সরকারি নয়—এই অজুহাতে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে—“শিক্ষা কি প্রতিষ্ঠাননির্ভর, নাকি মেধা-যোগ্যতাভিত্তিক?”

তাঁরা আরও বলেন, সরকার যদি সত্যিই বৈষম্যবিরোধী নীতিতে অটল থাকে, তবে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে বেসরকারি ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে, ভবিষ্যতে রাজপথে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) চালুর ফলে বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০২২ সালে আবারও বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পর ২০২৫ সালের ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর নতুনভাবে পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে তাতে কেবল সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে—এই সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে বেসরকারি বিদ্যালয় ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

মানববন্ধন শেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এর অনুলিপি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছেও হস্তান্তর করেন শিক্ষক নেতারা।