আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় জনপদ। উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের যুবক ছৈয়দ নুর (৩২)–কে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। চারদিন পর গহীন পাহাড় থেকে তাঁর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রোহিঙ্গাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাশরুরুল হকের নেতৃত্বে এবং ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. জাফর ইকবালের সহায়তায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আজুখাইয়া ফকিরপাড়া এলাকার পাহাড় থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ছৈয়দ নুর উখিয়ার দরগাহ বিল বাগানপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলী আহমদের ছেলে। সীমান্ত এলাকায় সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
নিহতের খালাতো ভাই আবদুস সালাম জানান, গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর আজুখাইয়া গ্রামের অচিয়র রহমানের ছেলে ইসমাইল (৩০) ফোনে সিগারেট সংক্রান্ত ব্যবসায়িক লেনদেনের কথা বলে ছৈয়দ নুরকে আমতলী ছড়ায় ডেকে আনেন। সেখান থেকে বাইশফাঁড়ী যাওয়ার কথা বলে তাঁকে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, হাত-পা বেঁধে হত্যা করে পাহাড়েই ফেলে রাখা হয়।
ছৈয়দ নুরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর স্ত্রী জোবাইদা বেগম (২২) এবং দুই কন্যা — সাড়ে পাঁচ বছরের ফারজানা ইয়াসমিন মুন্নি ও আড়াই বছরের জান্নাতুল ফেরদৌস উর্মি — গভীর শোক ও অসহায়ত্বে দিন কাটাচ্ছেন।
মামলার পর পুলিশ সন্দেহভাজন ইসমাইলকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ এর সি-ব্লকের রহমত উল্লাহ (৩০)–কে গ্রেফতার করা হয়। সে ওই ক্যাম্পের মো. আয়াসের ব্লকে বসবাস করত। তার বাবা-মা হলেন আলী উল্লাহ ও শামসুন্নাহার।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের মোটরসাইকেল উদ্ধারে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি ব্যক্তিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মাশরুরুল হক বলেন, “ছৈয়দ নুরের স্ত্রী জোবাইদা বেগম থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তদন্তের ভিত্তিতে বাকি জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
