মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
হত্যা মামলায় ২ আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে প্রত্যককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (১৪ জুলাই) কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামীরা হলেন- মতিন প্রকাশ দানেল ত্রিপুরা, পিতা-শাতিরাম ত্রিপুরা এবং প্রীতি প্রকাশ হৃদয়, পিতা -বালস্থ ত্রিপুরা। উভয়ে বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার ছত্রপাড়ার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামী মতিন প্রকাশ দানেল ত্রিপুরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর দন্ডিত আসামী প্রীতি প্রকাশ হৃদয় পলাতক রয়েছে।
মামলার পটভূমি :
২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারী রাত ১০ টার দিকে তৎকালীন কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালীর মৃত ওবায়দুল হকের পুত্র অটোরিকশা চালক ওমর ফারক (২৬) হত্যা করে পোকখালী হাইস্কুলের উত্তরে রাস্তার পশ্চিম পাশে খালের মাঝে ফেলে দেয়। খুনীরা ওমর ফারুকের অটোরিকশা ও মোবাইল ফোনটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের মা দিলোয়ারা বেগম বাদী হয়ে আজহারুল ইসলাম প্রকাশ পুতিয়া, মতিন প্রকাশ দানেল ত্রিপুরা এবং প্রীতি প্রকাশ হৃদয়কে আসামী করে কক্সবাজার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার কক্সবাজার সদর থানা মামলা নম্বর ৫৯, তারিখ : ২৩/০১/২০১৬ ইংরেজি। জিআর মামলা নম্বর : ৪৯/২০১৬ (সদর) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৪৫৬/২০১৭ ইংরেজি।
বিচার প্রক্রিয়া :
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মতিন প্রকাশ দানেল ত্রিপুরা এবং প্রীতি প্রকাশ হৃদয়কে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ পত্র (চার্জশীট) এবং মামলার অপর আসামী আজহারুল ইসলাম পুতিয়া শিশু হওয়ায় তার জন্য আরেকটি পৃথক অভিযোগ পত্র (চার্জশীট) দিয়ে সেটি শিশু আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই মতিন প্রকাশ দানেল ত্রিপুরা এবং প্রীতি প্রকাশ হৃদয়ের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করে বিচারকার্য শুরু হয়। মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে তাদের জেরা, নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা, আলামত প্রদর্শন, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায়ের জন্য সোমবার দিন ধার্য করা হয়। রায় প্রচারের দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মামুনুর রশিদ ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩০২ ধারায় মতিন প্রকাশ দানেল ত্রিপুরা এবং প্রীতি প্রকাশ হৃদয়কে দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে প্রত্যককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস থেকে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, আসামী মতিন প্রকাশ দানেল ত্রিপুরার পক্ষে অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান ও পলাতক আসামী প্রীতি প্রকাশ হৃদয়ের পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী হরিসাধন পাল মামলাটি পরিচালনা করেন।
Abu Siddique
