কক্সবাজারের পেচারদ্বীপ সমুদ্রসৈকতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানকে পাঁচ দিনেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

শনিবার (১২ জুলাই) সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলমের নেতৃত্বে ফের শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। ফায়ার সার্ভিস, লাইফ গার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচ কর্মীদের পাশাপাশি অভিযানে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। তারা ড্রোনের মাধ্যমে সমুদ্র ও উপকূলজুড়ে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে।

সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সুপারভাইজার ওসমান গনি জানান, নিখোঁজের ৫ম দিনেও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত মহেশখালী, সোনাদিয়া, মাতারবাড়ি, কুতুবদিয়া উপকূল ও আশপাশের সাগর এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। পাশাপাশি বিচ কর্মীরা পায়ে হেঁটে উপকূলজুড়ে অভিযান চালাচ্ছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে অরিত্র হাসান তার দুই সহপাঠীসহ সাগরে গোসলে নামেন। পরে দুপুরে কে এম সাদমান রহমান সাবাব (২১) এর মরদেহ সৈকতে ভেসে আসে। পরদিন বুধবার সকালে ১৭ কিলোমিটার উত্তরে সমিতিপাড়া সৈকতে ভেসে ওঠে আরেক শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ (২২)-এর মরদেহ।

আসিফ বগুড়া সদরের নারুলি দক্ষিণের রফিকুল ইসলামের ছেলে এবং সাবাব ঢাকার মিরপুরের কে এম আনিছুর রহমানের ছেলে। দুজনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের আবাসিক ছিলেন।

নিখোঁজ অরিত্র হাসান বগুড়ার দক্ষিণ সনসনিয়া গ্রামের সাকিব হাসানের ছেলে।

জেলা প্রশাসনের বিচ কর্মীদের সুপারভাইজার মাহবুব আলম জানান, কক্সবাজার উপকূলের মহেশখালী থেকে টেকনাফের নাফ নদীর মোহনা পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কিলোমিটার এলাকায় তল্লাশি চালানো হলেও এখনো অরিত্রর কোনো সন্ধান মেলেনি।

এদিকে অরিত্র হাসানের বাবা সাকিব হাসান বলেন, “আমি একজন ভাগ্যবিড়ম্বিত, অসহায় বাবা। বলার মতো মানসিক অবস্থাও নেই। কিন্তু আমরা যে রিসোর্টে উঠেছিলাম, তারা কোনো সতর্কবার্তা দেয়নি যে সৈকত বিপজ্জনক। এই অব্যবস্থাপনার দায় রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের, সেইসাথে রাষ্ট্রেরও।”

তিনি দ্রুত ছেলের সন্ধান চান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারির দাবি জানান।