আজিজুর রহমান রাজু, ঈদগাঁও;
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও উপজেলার দুই শহীদ—নুরুল আমিন ও নূর মোস্তফার কবর জিয়ারত ও তাদের পরিবারের খোঁজখবর নিতে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দিন শাহিন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে পুলিশ সুপার শহীদদের বাড়ি পরিদর্শনে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আহমেদ পেয়ার, ঈদগাঁও থানার ওসি মো. মশিউর রহমান, ছাত্র প্রতিনিধি হাবিব আজাদ, আবদুর রহিম, মাহাতির, মোহাম্মদ তারেকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন, কবর জিয়ারত করেন এবং নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন। তিনি আশ্বাস দেন, প্রশাসন সব সময় শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে।
শহীদ নুরুল আমিন পূর্ব গজালিয়ার ডালার মুখ এলাকার দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মাত্র ১৩ বছর বয়সে সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। চট্টগ্রামে জান্নাত হোটেলে শ্রমিকের কাজ করতেন এবং বিদেশে যাওয়ার স্বপ্নে ফিঙ্গারপ্রিন্টও সম্পন্ন করেছিলেন। গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি। ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অন্যদিকে, শহীদ নূর মোস্তফা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঈদগাঁও থানার সামনে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন। ৬ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। তিনি ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম গজালিয়া এলাকার বাসিন্দা। যদিও এখনো সরকারিভাবে ‘জুলাই শহীদ’ স্বীকৃতি পাননি, যা পরিবারের জন্য কষ্টের বিষয় হয়ে আছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শহীদ নূর মোস্তফার বাবা শফিউল আলম ১৯৯২ সালে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং ঈদগাঁও এলাকায় স্থায়ীভাবে বসতি গড়েন।
দুই শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশ যে মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে, তা প্রশংসিত হয়েছে এলাকাবাসীর কাছে। স্থানীয়রা পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
