ঈদগাঁও সংবাদদাতা ;

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ছাতিপাড়া এলাকায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চারটি গরু লুট করেছে একদল সশস্ত্র ডাকাত। ভোররাতে সংঘটিত এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। ডাকাতরা পুলিশ পরিচয়ে বাড়িতে ঢুকে এই লুটপাট চালায় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভোররাতে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল প্রথমে মৃত মোজাহারের ছেলে আবদু সমদের বাড়িতে হানা দেয়। অস্ত্র ঠেকিয়ে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে গোয়ালঘর থেকে চারটি গরু গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর তারা পার্শ্ববর্তী বেলালের বাড়িতে গিয়ে গোয়ালঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। বেলাল এগিয়ে এলে ডাকাতরা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেয়। আশপাশের লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে ডাকাতদল বেলালের গরু রেখে দ্রুত আবদু সমদের গরু নিয়ে পালিয়ে যায়।

আবদু সমদ ও বেলাল এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তারা ঈদগাঁও থানাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল বলেও জানান তারা। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা কামাল হোসেনও ঘটনাটি নিশ্চিত করেন।

ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মছিউর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, ঈদগাঁও এলাকায় একের পর এক ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনায় জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর আগে গত ২০ জুন ভোরে উপজেলার উত্তর মাইজপাড়ায় একটি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মালামাল এবং ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদের বাড়ি থেকে তিনটি গরু লুট করে ডাকাতদল। এর আগের দিন ১৯ জুন সাতঘরিয়া পাড়ায় মসজিদের ইমাম মনছুর আলম আজান দিতে গেলে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার শ্বশুর ইসহাকের বাড়ি থেকে ছয়টি গরু নিয়ে যায়। আরও আগের ১৬ জুন ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কে গণডাকাতির ঘটনা ঘটে, যেখানে তিনজন যাত্রীকে, একজন স্কুলছাত্র—অপহরণ করে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তির ফলে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করছেন, ঈদগাঁও থানার বর্তমান প্রশাসন সুশৃঙ্খল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে বরং রাজনৈতিক সখ্যতা গড়ে তুলে অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। থানা পুলিশ বড় অপরাধীদের না ধরে বরং ছোট অপরাধীদের ধরে কার্যকলাপের প্রদর্শনী করছে বলে মন্তব্য করেন অনেকে।

স্থানীয় জনগণ মনে করছেন, ঈদগাঁও থানা পুলিশের মধ্যে দুর্বলতা ও অসচ্ছতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। তারা কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং ঈদগাঁও থানার বর্তমান প্রশাসনের কার্যক্রম পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।