সিবিএন ডেস্ক ;
এক দেশে ছিল এক বিশাল পাহাড়। সে সব সময় আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নে বিভোর থাকত। আকাশের দিকে তাকিয়ে সে ভাবত, “আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বড়, আমি আকাশের এত কাছাকাছি!”
পাহাড়ের পাদদেশে ছিল এক গাঢ় নীল সমুদ্র। তার ঢেউ গর্জন করত, উথাল-পাথাল হয়ে উঠত, আর গর্বভরে বলত, “আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বড়, আমি তো সারা দুনিয়াকে ঘিরে আছি!”
একদিন পাহাড় বলল, “শোনো সমুদ্র, আমার মাথা মেঘ ছুঁয়েছে, আমার গায়ে বরফ জমে। আমি নিশ্চয়ই তোমার চেয়ে অনেক বড়।”
সমুদ্র হেসে বলল, “তোমার মাথা যতই উঁচু হোক, তুমি তো স্থির। আমি চলি, আমি ছুটে বেড়াই, আমি পৃথিবীকে আলিঙ্গন করি। তাই আমি বড়।”
পাহাড় গম্ভীর কণ্ঠে বলল, “বড় হওয়া মানে উচ্চতায় পৌঁছানো।”
সমুদ্র শান্ত কণ্ঠে বলল, “বড় হওয়া মানে সীমাহীন বিস্তারে পৌঁছানো।”
তাদের এই তর্ক শুনে আকাশ হেসে বলল, “তোমরা দুজনেই বড়। পাহাড়ের উচ্চতা ছাড়া পৃথিবীর সৌন্দর্য অপূর্ণ, আর সমুদ্রের বিস্তৃতি ছাড়া প্রাণ অসম্ভব।”
পাহাড় কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, “সমুদ্র, তোমার ঢেউ আমার গায়ে এসে ধাক্কা দেয়, আমি তোমাকে অনুভব করি।”
সমুদ্র মিষ্টি হেসে বলল, “আর তোমার বুক থেকে নেমে আসা ঝরনা আমার বুকে মিশে যায়, আমি তোমাকে ধারণ করি।”
এরপর তারা বুঝতে পারল -বড় হওয়ার মানে একে অপরকে ছোট ভাবা নয়, বরং একে অপরের সৌন্দর্য ও প্রয়োজনীয়তাকে সম্মান করা।
সেই দিন থেকে পাহাড় আর সমুদ্র পরিণত হলো সত্যিকারের বন্ধুতে, আর তাদের মাঝে অহংকারের কোনো জায়গা রইল না।
শিক্ষণীয় বিষয়: বড় হওয়া মানে নিজেকে বড় ভাবা নয়, বরং অন্যের গুরুত্বকে বোঝা ও সম্মান করা।
