চট্টগ্রাম সংবাদদাতা ;
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে অপহৃত রিয়াজুল হাসানকে (১৮) ধারাবাহিকভাবে শারীরিক নির্যাতনের মুখে ফেলেছে অপহরণকারীরা। অপহরণকারীরা ফোনে তার আর্তনাদের শব্দ শোনাচ্ছে বাবাকে, সঙ্গে মিলছে প্রাণনাশের হুমকি—যদি না পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হয়।
অপহৃত রিয়াজুল লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের পদ্মশিখিল এলাকার ফেরদৌস আলমের ছেলে। পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক বাবা মুক্তিপণ দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় ছেলের প্রাণ বাঁচাতে বারবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
গত ১৭ জুন (মঙ্গলবার) দুপুরে বাড়ি থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন রিয়াজুল। এরপর তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে (০১৮৭০-৪৯৫১৩৬) ফোন করলে অপরিচিত একজন ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না দিলে লাশ ফেরত দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন।
পরবর্তীতে লোহাগাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারে, অপহৃত রিয়াজুলের সর্বশেষ অবস্থান ছিল টেকনাফের হ্নীলা এলাকায়। তবে সর্বশেষ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে অবস্থান নারায়ণগঞ্জ দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
রিয়াজুলের বাবা ফেরদৌস আলম জানান, “ছেলেকে নির্দয়ভাবে মারধর করা হচ্ছে। সেই আর্তনাদ ফোনে শুনিয়েও মুক্তিপণের জন্য চাপ দিচ্ছে। প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা চাওয়া হলেও এখন এক লাখে ছাড় দিতে রাজি বলেছে। আমার সে সামর্থ্য নেই। আমি শুধু ছেলেকে ফেরত চাই।”
টেকনাফ মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা হিমেল রায় বলেন, “উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। মোবাইল নম্বরের অবস্থান ট্র্যাক করে কাজ করা হচ্ছে।”
লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, “ঘটনার পরপরই টেকনাফ থানাকে চিঠি দিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য অবস্থান হ্নীলা এলাকায় শনাক্ত করা হয়েছে।”
এদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, গত ১৭ মাসে টেকনাফে অপহরণের শিকার হয়েছেন অন্তত ২৫৪ জন। স্থানীয়ভাবে এ ঘটনা এলাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী দ্রুত অপহরণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।