কক্সবাজার সংবাদদাতা:

স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। একের পর এক প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে সৈকতের দোকানপাট ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শুক্রবার (৩০ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি সত্ত্বেও হাজারো ভ্রমণপিপাসু সৈকতে ভিড় করেছে।

সাগর উত্তাল থাকায় বারবার মাইকিং করেও পর্যটকদের সরানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা। বিশেষ করে সুগন্ধা, লাবনী ও কলাতলী পয়েন্টে জোয়ারের পানি সড়ক পর্যন্ত চলে এসেছে, তলিয়ে গেছে বহু দোকান।

সুগন্ধা বিচে সরেজমিনে সকাল ১১টায় দেখা গেছে, স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি উচ্চতায় সাগরের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক হোসাইন ইব্রাহীম বলেন, “সাগরের ঢেউ দেখে ভয় লাগছে। গোসল করছি না, তবে চারপাশের পরিবেশও অসাধারণ লাগছে।”

আরেক পর্যটক সৈয়দুল করিম জানান, “এত বড় ঢেউ আগে কখনো দেখিনি। সুন্দরও লাগছে আবার ভয়ও করছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এবারই প্রথম এসেছি।”

পর্যটক সানজিদা খানম বলেন, “এতো বড় ঢেউ দেখে মনে হচ্ছে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক করছে, সেটা স্বস্তির।”

সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ শুক্কুর জানান, মাদ্রাসা পয়েন্ট থেকে শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে। লাবনী ও সুগন্ধা পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্স এবং বহু দোকান তলিয়ে গেছে। কলাতলী পয়েন্টেও পরিস্থিতি একই রকম।

তিনি বলেন, “সাপ্তাহিক ছুটির কারণে কয়েক হাজার পর্যটক ভিড় করেছে। বারবার সতর্ক করার পরও অনেকেই সাগরে নামছেন, যা বিপজ্জনক।”

সুগন্ধা পয়েন্টের ব্যবসায়ী করিম বলেন, “জোয়ারের পানি এসে প্রায় ২০ হাজার টাকার মালামাল নষ্ট করেছে। দোকান এখন পানির নিচে।”

আরেক ব্যবসায়ী আলমগীর জানান, “সুগন্ধা পয়েন্টে ৫০০-এর বেশি দোকান রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় প্রায় সব দোকান বন্ধ। কেউ ব্যবসা করতে পারছেন না, অনেক দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে।”

দুই দিনের বৈরী আবহাওয়ায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের ব্যবসা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও পর্যটকদের অসচেতনতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।