মোঃ ওসমান গনি (ইলি):

কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যাতে ২১টি বাসা ও ৯টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ১লা মার্চ গভীর রাতে ঈদগাঁও বাজারের মাছ বাজার সংলগ্ন নজরুল কলোনিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

 

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নজরুল কলোনির একটি বাসার গ্যাস লাইন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে শুরু হওয়া এই অগ্নিকাণ্ড প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। ভোর সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে রমিজের মোটর বাইক, নারিকেল, নিম ও বড়ই গাছসহ বিপুল পরিমাণ ব্রয়লার মুরগি, তরি-তরকারি, কাঁচা ও শুকনো মাছ পুড়ে যায়। এসব সামগ্রী পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে মজুদ করা হয়েছিল।

 

ঈদগাঁও উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস না থাকায় এবং বাজারের যানজটের কারণে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।

 

নজরুল কলোনির মালিক নজরুল ইসলাম জানান, তার কলোনিতে একটি অফিস ঘরসহ ১০টি বাসা পুড়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী রশিদ আহমদের মালিকানাধীন কলোনির ১১টি ভাড়া বাসাও সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। নজরুল ইসলাম প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা দাবি করেন।

 

মাছ বাজার ভাই ভাই একতা সমিতির সভাপতি শওকত আলম জানান, অগ্নিকাণ্ডে বৈদ্যুতিক মিটার, ভাল্ব, ব্যারেল, আইপিএস, ককসিট, চেয়ার, টুলসহ নানা সামগ্রী পুড়ে গেছে। মুরগি দোকানদার জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার দোকানের ছয়শত মুরগি পুড়ে গেছে, যার মধ্যে কিছু লুটপাটও হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর মধ্যে মুরগি, শুটকি, কাঁচা মাছ, তরকারি, মুদি ও মাছ কাটার দোকান ছিল। ভুক্তভোগী দোকানদারদের মধ্যে ইসলাম, রমিজ, মৃদুল, রূপয়, সুজন, সুমন ও দিল মোহাম্মদ রয়েছেন। দোকানি আবু তাহের জানান, রমজানের জন্য মজুদ রাখা ২০-২৫ হাজার টাকার কোমল পানীয়সহ তার বাসার সবকিছু পুড়ে গেছে। মাছ কাটার দোকানদার সুজন দাস ও সুমন দাসও বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

 

সকাল ৯টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জ ও বাজার সভাপতি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। স্থানীয় জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার অগ্নিনির্বাপণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

সকল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে জরুরি সহায়তা ও পুনর্বাসনের আবেদন জানিয়েছেন।