ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার :

কক্সবাজারের টেকনাফে বিদ্যুতের লুকোচুরি হাঁসফাঁস অবস্থা, পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং আর সহ্য হচ্ছে না। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আধ ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ দিয়ে দুই ঘণ্টা বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয় এই উপজেলায়।

এদিকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিলে ফোন ধরেন না-এমন অভিযোগ উঠেছে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে। এই উপজেলায় লোডশেডিং এমনই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, বিদ্যুৎ এই আছে তো এই নেই। বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় বিপর্যস্ত পুরো উপজেলার জনজীবন।

পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এ অবস্থা। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে দিনরাতের অধিকাংশ সময়। গড়ে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা, কোথাও আবার এর চেয়েও বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। লোডশেডিংয়ে ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তীব্র লোডশেডিংয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ অনেক। তাই জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি সবার।

হ্নীলা রঙ্গিখালীর অটোরিক্সা চালক বশির আহমদ বলেন ‘ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। আমাদের অটোরিকশা ফুল চার্জ করতে পারি না। রাতে ঘুমাতে অনেক কষ্ট হয়। এমনিতেই আমাদের এখানে তীব্র গরম চলছে, তার ওপর আবার বিদ্যুৎ থাকে না। খুব কষ্টে আছি।’ হালকা চার্জ দিয়ে গাড়ি বের করলে ভাড়ার টাকাও উঠেনা।

শাহপরীরদ্বীপ এলাকার গৃহিণী জয়নাব বেগম আক্ষেপ করে বলেন, এই উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ থাকে না ১৫-১৬ ঘণ্টা। এতে ফ্রিজে থাকা সব জিনিস নষ্ট হয়ে যায়। রিচার্জেবল ফ্যান বা আইপিএস থাকলেও বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে বাসাবাড়িতে তাও চার্জ হয় না। এভাবে তো মানুষ চলতে পারবে না।

উপজেলার হোয়াইক্যংয়ের সাইফুল ইসলাম বলেন, দিন-রাত মিলিয়ে ২৫-৩০ বার লোডশেডিং হয়। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। রাতে ঘুমাতে পারি না। রাতে ভোল্টেজ কম থাকায় ফ্যানও ঘুরে না। লোড শেডিংয়ে জীবন অতিষ্ঠ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা পড়েছেন মহা বিপদে।’

এই অবস্থায় এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত বিদ্যুতের লুকোচুরি বন্ধ করে যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মোরশেদ আলম বলেন, আন্দোলন করে সীমান্ত উপজেলায় ইতিমধ্যে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সমস্যা রয়ে গেছে। বাংলাদেশের সমস্ত উপজেলায় বিদ্যুৎ সার্ভিস ভালো আছে সমস্যা শুধু টেকনাফে। দ্রুত সময়ে এর সমাধান করতে পারলে ছাত্রজনতা মাঠে নামবে বলে তিনি হুমকি দেন।

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ টেকনাফ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আবুল বাশার আজাদ বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় এবং পাওয়ার গ্রিডে টেকনিক্যাল সমস্যা থাকায় লোড নিতে পারছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’