নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারে রুহুল আমিন নামক ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের প্রাপ্য অধিকার সহায়-সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার নানা অপকৌশল করছে দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমা খানম (৪৩)।

ইতোমধ্যে সন্তানরা সতীনের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করেও সুরাহা হয়নি। উল্টো হুমকি-ধমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। নানাভাবে হয়রানি করছেন। স্বামীর মৃত্যুর আগে রেখে যাওয়া সম্পদ কোন কৌশলে আত্মসাৎ করা যায়, তার ফন্দি ফিকিরে রয়েছেন ফাতেমা খানম।

মরহুম রুহুল আমিন পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের সৈকতপাড়ার বাসিন্দা। পূর্ব ঠিকানা- বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার মচন্দপুর এলাকায়। তিনি কক্সবাজার শহরের পরিচিত ঠিকাদার ছিলেন।

এদিকে, নিজেদের প্রাপ্য অধিকারের জন্য আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন মরহুম রুহুল আমিনের প্রথম স্ত্রীর বড় মেয়ে সাদিয়া আমীন। যার সিআর মামলা নং-১৩১২/২৪। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সদর) দায়েরকৃত মামলাটি সদর মডেল থানায় তদন্তাধীন। মামলায় সতীন ছাড়া আরো তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, তার পিতা রুহুল আমিন গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর স্ট্রোক করে মারা যান। তারা ৩ বোন, ১ ভাতিজা ও এক ভাতিজি রয়েছেন।
ইসলামী শরীয়ত ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পিতার রেখে যাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মালিক হবেন তারা।

ইতোমধ্যে জানা গেছে, কক্সবাজার কলাতলীর মারমেইড বীচ রিসোর্ট এর সামনে হিমছড়িতে দুটি মূল্যবান বাগান জমি রেখে যান মরহুম রুহুল আমিন। শহরের সৈকতপাড়া এলাকায় একটি স্টেশনারি ও চা-মোদির দোকান রয়েছে, যাতে অন্তত ১২ লক্ষ ঢাকা জামানত দেওয়া আছে। ঠিকাদারির সুবাদে বিভিন্ন সংস্থার নিকট কয়েক কোটি টাকা পাওনা রয়েছেন। বিশেষ করে কলাতলী জামে মসজিদ, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন, পি এইচ পি গ্রুপ, গ্রীন ডেল্টা, ম্যাক্স গ্রুপ, আমিন ইন্টারন্যাশনাল, সেন্ডেলিনা হোটেল, হাই বেরিয়ন/সান ক্রুজ, সুগন্ধা মসজিদসহ আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা পাওনা রয়েছেন মরহুম রুহুল আমিন। এছাড়া বাগানবাড়ি সাইট, গর্জনবাগান সাইট কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীও রয়েছে এক কোটি টাকার কাছাকাছি।

সাদিয়া আমীনের অভিযোগ, পিতার রেখে যাওয়া সমস্ত সম্পত্তি এককভাবে ভোগ করছেন সতীন ফাতেমা খানম। বিগত এক বছরে বিভিন্ন সাইটে রক্ষিত মালামাল বিক্রি করে অন্তত ৬০ লক্ষ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে জমা টাকা ও ডিপিএস এর হিসাব রয়েছে একমাত্র সতীনের নিকট।

আরো অভিযোগ করা হয়, পিতার মৃত্যুর পর সম্পদের সুষম বন্টন, ভাগ বাটোয়ারা ইত্যাদি নিয়ে হিসাবের জন্য বৈঠকে বসতে বসলে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করছেন সতীন ফাতেমা খানম। স্থানীয়ভাবে সালিশের জন্য ডাকলেও মানেন না তিনি। বিচার, আইন আদালত তোয়াক্কা করছেন না। উল্টো অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে চলেছেন। ন্যায্য অধিকার পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন মরহুম রুহুল আমিনের মেয়ে সাদিয়া আমীনের।

অভিযুক্ত ফাতেমা খানমের বক্তব্য জানতে তার বাসা ও দোকানে গিয়ে পাওয়া যায়নি।

তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এস আই) সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্তের আদেশ প্রাপ্তির পর বিবাদীকে নোটিশ করতে বাসায় গিয়েছি। এখনো তার সন্ধান পাইনি। সঠিক বিষয়টি জেনে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।