নুরুল আলম সাঈদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে সীমান্ত থেকে মিয়ানমার পাচার কালে ৩ শত বস্তা ইউরিয়ার সার জব্দ ও ২ পাচারকারীকে আটক করেছে করেছে তুমব্রু বিওপির বিজিবি জোয়ানরা।
শনিবার (১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ও বিকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ঘুমধুম খালের তুমব্রু এলাকা থেকে এসব সার জব্দ করা হয়। এই সময় সাথে ২ জন পাচারকারীকেও আটক করতে সক্ষম হন বিজিবি।
এর আগে ৩৪ বিজিবি জোয়ানরা আরো বেশ কয়েকটি চালান জব্দ করে গত কয়েক মাসে।
ঘুমধুম সীমান্তে সার পাচারের সিন্ডিকেট সদস্য ৫০ জন। তাদের মধ্যে উখিয়া,কুতুপালং বাজার,কচুবুনিয়া,তুমব্রু পশ্চিমকূল ও তুমব্রু বাজার এলাকার গড়ফাদাররা রয়েছে তাদের নেতৃত্বে । জব্দ করা ৩শ বস্তা সারের চালানটি মিয়ানমারে যাওয়ার এর আগে ৩৪ বিজিবি জোয়ানরা আরো বেশ কয়েকটি চালান জব্দ করে গত কয়েক মাসে। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের দক্ষিণাংশে দায়িত্বেরত কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সংগত কারণে মায়ানমারের পাচারের জন্য গোপনে মজুদকৃত আবশিষ্ঠ সার গুলিসহ চোরাকারবারিদের ধরতে গ্রেফতারকৃতদের নাম এই মুহূর্তে প্রকাশ করছি নার।
ঘুমধুমের বাসিন্দা আবদুস ছালাম,শফিক আহমদ ও মোহাম্মদ হাসান জানান,ঘুমধুম সীমান্তে সার পাচারের সিন্ডিকেট সদস্য ৫০ জনের সংঘবদ্ধ দল বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে উখিয়া,কুতুপালং বাজার, কচুবুনিয়া, তুমব্রু পশ্চিমকূল ও তুমব্রু বাজার এলাকার গড়ফাদাররা রয়েছে তাদের নেতৃত্বে তারা শ্রমিক খাঁটিয়ে গভীর রাতে প্রভাবশালীদের চাঁদা দিয়ে ঘুম ধুমের কচুবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বড়ুয়া পাড়া এলাকার ঘুমধুম পচা খালের ঘাঁট দিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার খালে খালে পূর্ব-দক্ষিণের নিয়ে মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু রাইট ক্যাম্পের সামান্য পশ্চিম হয়ে মিয়ানমারে নিয়ে যায় এই সার।
তন্মধ্যে ৫০ কেজি পরিমাপের ৩’ শত ইউরিয়া সার বস্তা বিজিবি জোয়ানরা জব্দ করে। শুক্রবার গভীর রাতে ও শনিবার বিকালে এই সার গুলি জব্দ করে । এ সময় পালানোর চেষ্টাকালে ২ চোরাকারবারি ও সহযোগীকেও আটক করতে সক্ষম হয় বিজিবি।
গোপন সংবাদে খবর পাওয়া আরো ২’ শত বস্তা সার কোথায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তা হন্য হয়ে খুঁজছে তুমব্রু ও ঘুমধুম বিওপি জোয়ানরা।
এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার ইনামুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘুমধুমে ৩’ শত বস্তা ইউরিয়া সার জব্দ ও পাচারকারী আটক বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কেউ আমাকে কিছু জানায় নি।
উল্লেখ্য যে,গত ২৮ আগস্ট গভীর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তুমব্রু পাহাড় পাড়ায় নির্মিতব্য ট্রানজিট সেন্টার সংলগ্ন রোস্তম আলীর দোকানের সামনে থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সার ভর্তি ড্রাম ট্রাকটি জব্দ করে বিজিবি।
ওই দিন বিজিবি , গাড়িতে, টি এস পি ৫০ কেজির ৪০ বস্তা ও ৫০ কেজির ৬০ বস্তা ইউরিয়া সার ছিল বলে জানায়। সারগুলো ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ বাইশফাঁড়ি বাজারের সাব ডিলার সাইদী আলমের।
সাইদী আলমে কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির কৃষি অফিস থেকে সার গুলো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বরাদ্দকৃত সার ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার থেকে নিতে হয়। বিসিআইসি ডিলারে যোগাযোগ করে সার না থাকাতে ভিন্ন উপজেলা (উখিয়া) থেকে বরাদ্দের কাগজ দেখিয়ে আনাতে সারগুলো জব্দ করে ফেলেন বিজিবি।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন’র (ঘুমধুম ইউপির ১,২,৩ দায়িত্ব প্রাপ্ত) কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়ার্ড ভিত্তিক উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবং বরাদ্দকৃত সার ইউনিয়নের অনুমোদিত বিসিআইসি ডিলার থেকে নিতে হয়।
তিনি আরো বলেন, যদি কেউ নিয়মবহির্ভূত অন্য উপজেলা থেকে নিয়ে থাকেন তাহলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার। যা অবৈধ বলে গণ্য হবে। প্রত্যক্ষদর্শী সাবেক মেম্বার কামাল উদ্দিন বলেন,ঘুমধুমের ইউনিয়ন সার ডিলার ও ঘুমধুম ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ ওয়ার্ডের খুচরা সার ডিলার ভিন্ন উপজেলা বা জেলা থেকে বরাদ্দের বাইরে সার এনে সীমান্তের বাইশফাঁড়ি বাজারে গোপনে মজুদ করে সুযোগ বুজে সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারে পাচার করে দেয়। এমন ভাবে গোপনে মিয়ানমারে সার পাচারের ফলে প্রকৃত কৃষকগণ সার না পেয়ে হাপিত্যেশ করছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।