মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি:
জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হুমকিতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বান্দরবান জেলার লামা থানায় সাধারণ ডায়েরী করায় মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন নামের এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি বাজারে হামলার ঘটনাটি ঘটে। শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। ইউনিয়নের ডলুছড়ি বাজার পাড়ার বাসিন্দা মৃত আলী আহমদের ছেলে মো. মিনহাজ উদ্দিন (২৫) ও মো. ফারুক (৩০) সহ পোলাং পাড়ার বাসিন্দা শামশুল ইসলামের ছেলে মো. ইউছুপের (৩২) নেতৃত্বে আরও ২০-২৫ জন এ হামলা করেন।
মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সরই ইউনিয়নের আন্দারী জামাল পুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অভিযোগে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১১ আগস্ট প্রতিপক্ষের মো. মিনহাজ উদ্দিন ‘জামাল মেম্বারকে পাইলে খুন করে মাথা কেটে নিয়ে যাবে এবং লাশ গুম করে ফেলবে’ -এমন একটি ভয়েস কল রেকর্ড মুঠোফোনের হোয়াটসআ্যাপে স্থানীয় আবু সাঈদ এর নম্বরে পাঠায়।
আবু সাঈদ ভয়েস রেকর্ডটি ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনকে শুনান। এতে মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে গত ১৩ আগস্ট লামা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরী করার বিষয়টি শুনে মিনহাজ উদ্দিনরা আরও ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে গত ২১ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে ডলুছড়ি বাজারের জি ফার্মেসীতে ঔষধ কিনতে গেলে মিনহাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে অন্যরা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের উপর হামলা করেন।
হামলার পর অভিযুক্তরা বলেন ‘‘হামলার ঘটনার বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে কিংবা মামলা মোকদ্দমা করলে তোকে সহ তোর পরিবারের লোকজনকে প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবো, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি ও ঘরবাড়ি আগুন লাগিয়ে জ¦ালিযে দিবো’‘ বলে শাসিয়ে দেন। পরে ফার্মেসীর মালিক অনিন্দ কুমার দাশের সহায়তায় আশপাশের ব্যবসায়ীরা ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিনকে উদ্ধার করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জি ফার্মেসীর মালিক অনিন্দ কুমার দাশ জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে জামাল উদ্দিন মেম্বার ঔষধ কেনার জন্য আমার দোকানে আসলে মিনহাজ উদ্দিন, ইউছুপ ও ফারুক সহ আরও কয়েকজন অতর্কিতত দোকানে ঢুকে হামলা করেন। একই কথা জানালেন প্রতক্ষদর্শী দেলোয়ার, আবদুল মজিদ ও মো. আক্তার উদ্দিনও। তারা বলেন, একজন জনপ্রতিনিধির উপর এভাবে হামলা করা উচিৎ হয়নি। বিষয়টি খুবই দু:খ জনক। ভুক্তভোগী সরই ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে ২০১১ সালে মিনহাজ উদ্দিনদের বিরুদ্ধে একটি উচ্ছেদ মামলা করি। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত তাদেরকে আমার জায়গা থেকে উচ্ছেদের আদেশ দেন এবং উচ্ছেদও হন তারা। বিষয়টি সামাজিকভাবেও সমাধা হয়। কিন্তু একটি মিমাংশিত বিষয়কে নিয়ে তারা আমাকে সহ আমার
পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে বিভিন্ন সময় প্রাণ নাশের হুমকি আসছিল। এতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থানায় একটি জিড়ি করি। এ কারণে প্রতিপক্ষ
মিনহাজ উদ্দিনরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর হামলা করেন। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মিনহাজ উদ্দিন জানান, ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে আমাদের জায়গা অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে দোকানে বসে জামাল উদ্দিনের সাথে কথা বলেছিলাম। এখানে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। এদিকে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম শেখ জানায়, জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সরই ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন থানায় জিডি করেছেন। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।