আনোয়ার হোছাইন, ঈদগাঁও:
সড়কে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে আলোচিত সেই মাদার ট্রি গর্জন গাছ অবশেষে নিজেই হত্যার শিকার হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে !
যদিও বা গাছ হত্যার শিকার শব্দটি পড়লে বা শুনলে চমকিত হয়ে উঠার কথা।
গাছ কর্তনের ঘটনাটি ঘটেছে ১২ জুলাই (শুক্রবার) দিবাগত রাতে পাহাড়ি জনপদ ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের ভোমরিয়াঘোনা বনবিট সংলগ্ন মুইদ্দারঘোনা জসিমের নার্সারির পাশে ।
সরেজমিনে জানা যায়, কর্তনকৃত বিশালাকার মাদার ট্রি গাছের অংশ পড়ে সড়ক ও বিদ্যুৎ লাইনের উপর।এতে বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে এ গাছটি কর্তনের ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে এই সড়ক পথে যাতায়াতকারী জনগণকে কমেন্টস করতে দেখা যায় অসংখ্য যানবাহন ও যাত্রী দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার প্রধান কারণ এ মাদার ট্রি গর্জন গাছ। এসব দুর্ঘটনায় অনেক পথচারী নিহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। সড়কের উপর বেড়ে উঠা এ গাছের কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় অনেক মা-বাবার বুক খালি হয়েছে, স্ত্রী হারিয়েছে স্বামী,বোন হারিয়েছে ভাই, ভাই হারিয়েছে বোন।এছাড়া দশকের পর দশক এই গাছটির কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় হাজারো মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
এ জনপদের লাখো মানুষ দুর্ঘটনার কারণ এ গাছটি কেটে ফেলতে বারবার দাবি তুললেও সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ বন আইনের অজুহাতে গাছটি কাটেনি বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।
অবশেষে সেই গাছটি এবার রাতের আধাঁরে কে বা কাদের হাতে কর্তন তথা হত্যার শিকার হয়ে মাটিতে লুটিয়ে আছে।
সচেতন মহলের ধারণা, এ গাছটির কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে জীবন হারানো বা পঙ্গুত্ববরণ করা ক্ষুব্ধ পরিবারের সদস্যরাই এ মহাকান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।
তবে যে বা যারা এটা ঘটাক তাদেরকে ফেসবুকে স্বাগত জানিয়ে বন আইনের খোড়া অজুহাতে মানুষের জীবন নিয়ে খেলাকারী বনবিভাগকে ধিক্কার জানাচ্ছে।
অপরদিকে এ গাছের নাকের ডগায় ভোমরিয়াঘোনা বনবিটের অবস্থান। কিন্তু বনবিটের নাকের ডগায় এত বড় গাছ কীভাবে কর্তন হল তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এর পেছনে স্থানীয় বনকর্তাদের যোগসাজশের আশঙ্কা করছে।
সড়কের টার্নিংয়ের উপর গাছটি গজে উঠেছিল শতবর্ষ পূর্বে। ক্রমে গাছটি বৃহৎ আকার ধারণ করে। এর মধ্যে সড়কটি বেশ কয়েকবারে সংস্কার করা হলেও বনবিভাগের অসহযোগিতায় গাছটি রেখেই তাদের বারবার সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছে। গাছটির অবস্থান সড়কের আওতাভুক্ত টার্নিংয়ে হওয়ায় একযোগে উভয় দিক দিয়ে আসা যানবাহন গাছটির কারণে আড়ালে থাকায় যুগের পর যুগ যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
প্রতি দুর্ঘটনার পর গাছটি কর্তনের দাবি উঠলেও বনবিভাগ বন আইনের মারপ্যাচের দোহাইয়ে গাছটি কাটার ব্যবস্থা না নিয়ে মানুষের জীবন ও যানবাহনকে ঝুঁকিতে ফেলে মানুষের জীবনহানি ও পঙ্গুত্বের কারণ হিসেবে গাছটি ঠাঁই দাঁড়িয়েছিল ।দেরিতে হলেও এ গাছ কর্তন করে ফেলায় উক্ত জনপদের জনগণ স্বস্তি প্রকাশ করছে।
ভোমরিয়াঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা আনোয়ার খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান,রাতের আধাঁরে কে বা কারা এ মাদার ট্রি গর্জন কেটে ফেলেছে।গাছের কর্তিত অংশ বিদ্যুৎ লাইন ও সড়কের উপর পড়ার কারণে বিদ্যুৎ লাইন ও ৮ টি খুঁটির ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি সড়কে যানচলাচল চরম ব্যাহত হচ্ছে। রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কর্তিত গাছ সরানোর কাজ ও বিদ্যুৎ লাইন মেরামতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ কাজ করছে বলে জানান। এখনো পর্যন্ত গাছ কর্তন কারীদের চিহ্নিত করা যায়নি,তবে চেষ্টা চলছে বলে জানান।
