আব্দুস সালাম, টেকনাফ:

সাগরপথে ভাসমান অবস্থায় থাকা মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার স্থানীয় জেলেরা কূলে টেনে নিয়ে আসায় রক্ষা পেলেন ১৫০জন যাত্রী। তাঁদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। তাঁরা সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে উদ্ধারকারী নৌকার মাঝিরা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার( ৯ নভেম্বর) সকালে স্থানীয় জেলেরা সাগরে ভাসমান অবস্থায় থাকা ট্রলারটি উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়াপাড়া ঘাটের কূলে নিয়ে আসেন। এতে প্রাণে রক্ষা পান ১৫০ জন যাত্রী।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান জহির আহমেদ গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জোবাইর সৈয়দ জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে তাঁরা বিষয়টি জেনেছেন। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তবে বিষয়টি কোস্টগার্ড দেখছেন।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার সোলাইমান কবির জানান, এধরনের একটা সংবাদ শুনেছি এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি।

উদ্ধারকারী নৌকার জেলেরা জানান, ওই ট্রলারের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পারে, মানব পাচারকারী চক্র রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের বের করে আনে। সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এমন প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে ট্রলারে তোলে তারা। পরে সাগরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরার পর আজ ভোরে পাচারকারী চক্রের তিন মাঝি ট্রলারটি কূলের কাছাকাছি এনে সাগরে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় ট্রলারটি ঢেউয়ের কবলে পড়ে ভাসতে থাকে। একপর্যায়ে দুটি জেলেনৌকা ট্রলারটি দেখতে পায়। ওই সময় ট্রলারে থাকা নারী-পুরুষের আর্তচিৎকারে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন নৌকার মাঝিমাল্লারা। এরপর নৌকা দুটিতে রশি বেঁধে ট্রলারটিকে টেনে কূলে নিয়ে আসা হয়।

উদ্ধারকারী জেলেরা আরও জানান, কূলে নিয়ে আসার পর ট্রলারের যাত্রীরা পালিয়ে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ধরা না দিতেই তাঁরা পালিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নৌকার এক মাঝি বলেন, ‘ভাসমান অবস্থায় সাগর থেকে কয়েক বছর আগে কিছু রোহিঙ্গা নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছিল।এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রোহিঙ্গা পারাপারের অভিযোগ এনে উল্টো আমাকে কারাগারে পাঠায়। আজ ইচ্ছা করলে অনেক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটকে রাখা যেত। কিন্তু ঝামেলা এড়াতে গিয়ে এ থেকে বিরত ছিলাম। প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ছিল ওই ট্রলারটিতে। তারা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।’