জে. জাহেদ, কলকাতা থেকে…

কলকাতার ১৫ বছর বয়সী কিশোর অর্ণব দাগা গিনেস বুকে নাম লিখালেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, তাস দিয়ে অর্ণব নিজ শহরের চারটি বিখ্যাত স্থাপনা তৈরি করেছেন।

রাইটার্স বিল্ডিং, শহীদ মিনার, সল্টলেক স্টেডিয়াম এবং সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল তৈরি করতে ১ লাখ ৪৩ হাজার তাস, জিরো টেপ এবং আঠা ব্যবহার করেছেন তিনি। তার এই প্রকল্প দৈর্ঘ্যে ৪০ ফুট, উচ্চতায় ১১ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং প্রস্থে ১৬ ফুট ৮ ইঞ্চি।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের এক ব্লগে জানানো হয়, ব্রায়ান বার্গের করা আগের বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছে অর্ণব। তাস দিয়ে বানানো বার্গের স্থাপনার মধ্যে ছিল তিনটি ম্যাকাউ হোটেল; ৩৪ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা, ৯ ফুট এবং ৫ ইঞ্চি উঁচু এবং ১১ ফুট এবং ৭ ইঞ্চি চওড়া ছিল বার্গের প্রকল্প।

নিজ প্রকল্প সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ১৫ বছর বয়সী অর্ণব জানান, কাজ শুরুর আগে স্থাপত্য এবং সেগুলোর নানান মাত্রা সম্পর্কে ধারণা নিতে চারটি ভবনই নিবিড়ভাবে ঘুরে দেখেন তিনি।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বলেছে, অর্ণবের কৌশলের মধ্যে আছে ‘গ্রিড’ এবং ‘ভার্টিক্যাল সেল’। গ্রিড হচ্ছে চারটি অনুভূমিক কার্ড সমকোণে দাঁড়িয়ে থাকা। আর, ভার্টিক্যাল সেল দ্বারা বোঝায় চারটি উল্লম্ব কার্ড একে অপরের দিকে সমকোণে ঝুঁকে থাকা।

অর্ণব জানায়, শহীদ মিনারটি কেবলই ভেঙে পড়ছিল বলে ধীর হয়ে যায় তার ৪১ দিনের কাজ। তখন ‘ইম্প্রোভাইজ’ বা পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়। অর্ণব বলে, ‘এতগুলো ঘণ্টা ও দিনের কাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আবারও কাজটি শুরু করা ছিল হতাশাজনক। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ার কথা ভাবিনি একবারও।’

নিজ পড়াশোনা এবং রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টায় ভারসাম্য বজায় রাখতে ৪১ দিন ধরেই লড়তে হয়েছে অর্ণবকে। এই কিশোর বলে, ‘দুটো এক সঙ্গে করা খুব কঠিন ছিল, কিন্তু আমি সমস্ত অসুবিধা কাটিয়ে উঠতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম।’

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের মতে, অর্ণব আট বছর বয়স থেকেই কার্ড দিয়ে নানা কিছু বানিয়ে আসছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারিতে লকডাউনের সময় তিনি নিজের এই আগ্রহের জায়গা নিয়ে আরও কাজ করা শুরু করে। ঘরে সীমিত জায়গার কারণে ছোট ছোট কাঠামো তৈরি শুরু করে অর্ণব।

বিশ্ব রেকর্ডের গড়ার পর গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডকে ১৫ বছর বয়সী অর্ণব বলেছে, ‘ছোট কাঠামো তৈরিতে তিন বছরের কঠোর পরিশ্রম এবং অনুশীলন আমার দক্ষতাকে উন্নত করেছে এবং বিশ্ব রেকর্ড গড়ার চেষ্টায় আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এখন মনে হচ্ছে আমি স্বপ্নের মধ্যে বাস করছি, যে স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই ২০২০ সালে।’