বিএন ডেস্কসি:

খাকছার আলী নিজ গ্যারেজে কাজ করার সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করা হয়। রক্তে গ্যারেজ ভেসে যায় রক্তে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা বাজারে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

হাটের দিনে হত্যা করা হলেও এতে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী কিংবা কোনো ক্লু খুঁজে পায়নি পুলিশ। অবশেষে ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করার দাবি করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় আবীর হোসেন (২০) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আবীর আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মাত্র ১০০ টাকার জন্য দিনদুপুরে খাকছার আলীকে খুন করেছেন আবীর।

আসামী আবীর রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে। সে কখনও ভ্যান আবার কখনও রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে আবীরের বাড়ি ২০০ মিটার দূরে।

এ ঘটনায় খাকছার আলীর মেয়ে খাজিদা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বাঘা থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সবুজ রানা।

তদন্তে নেমে পুলিশ দেখতে পায় খাকছার আলীর জ্ঞাত কোনো শত্রুæছিল না। ছিল না কোনো ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী। পারিবারিক বিরোধ, জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি। ভরদুপুরে হাটের দিনে খুন হলেও ছিল না কোনো প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী। তদন্ত কর্মকর্তা সবুজ রানা বলেন, ‘প্রথাগত তদন্তের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে অনেক কাজ করা হয়। সম্ভাব্য সব বিষয় বিশ্লেষণ করে কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। কয়েক দিন আগে বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী আবীর হোসেন সন্দেহজনক আচরণ করছেন। শুক্রবার রাতে আবীরকে বাঘা থানায় আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবীর কোনো কিছুই স্বীকার করেননি। একপর্যায়ে তিনি মুখ খুলতে শুরু করেন। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে আবীর পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন যা পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।’

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আবীর জানান, ঘটনার দিন (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি ঘাস কাটার জন্য হাঁসুয়া নিয়ে বের হয়ে খাকছারের দোকানে যান। খাকছার তখন দোকানে একাই, নিজের জন্য পান বানাচ্ছিলেন। পাশেই বিকট শব্দে করাত কল চলছিল। পাড়া সম্পর্কে দাদা খাকছারের কাছে তিনি (আবীর) ১০০ টাকা চান। কিন্তু তিনি টাকা না দিয়ে গালি দেন। এতে রেগে গিয়ে আবীর হাঁসুয়া দিয়ে খাকছারের ঘাড়ে জোরে একটি কোপ মারেন। তখনই তাঁর মৃত্যু হয়। পাশে করাত কলের শব্দের কারণে কেউ কিছু শুনতে পায়নি। তিনি হাঁসুয়া নিয়েই বাজারের পেছন দিয়ে ঘাস কাটতে চলে যান।