যমুনা: পয়লা মে ২০২১ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০২২। ওই সময়ের গুম-খুনের মতো স্পর্শকাতর ঘটনা এবং তা নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছিল জাতিসংঘ। আগামী সেপ্টেম্বরে মানবাধিকার কাউন্সিলে জাতিসংঘ মহাসচিব এ নিয়ে বাৎসরিক প্রতিবেদন পেশ করবেন। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে বিস্তারিত তথ্য দেয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। সময় পেরিয়ে গেলেও তা প্রস্তুত করতে পারেনি ঢাকা।

সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণেই তা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ঈদের ছুটিসহ নানা কারণে এটা পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুতই সমন্বিত তথ্য জাতিসংঘকে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
তবে, মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সরকারের এমন আচরণ বিশ্ব সম্প্রদায়কে ভুল বার্তা দিতে পারে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, আমরা এখনও উত্তর দিই নাই। আমরা অপেক্ষা করছি, সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে সাড়া পেলে পাঠিয়ে দেব। আমরা ওদেরকে বলে রেখেছি, ঈদের বন্ধের কারণে সামান্য দেরি হতে পারে। কিন্তু কাজ চলছে। অনেক সময় যে ফরম্যাটে উত্তরগুলো চাওয়া হয়, আমরা হয়তো সে ফরম্যাটে বিভিন্ন সংস্থা থেকে উত্তরগুলো পাই না। তখন আমাদের একটু সময় লাগে ফরম্যাটিংটা করতে।

এর আগে র‍্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘটনায়ও সঠিক সময়ে তথ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বশীল আচরণ না করলে নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা থাকে।

এদিকে, মানবাধিকার কর্মী নূর খান বললেন, বিলম্বের কারণে ভুল বার্তা যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ আসতে পারে। সুতরাং এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা জাতিসংঘে সরবরাহ করা উচিত বলে মনে করি।

গুম-খুনের ঘটনার পাশাপাশি এগুলো নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী পদক্ষেপ নিয়েছে অর্থাৎ সরকারের অবস্থান কী, তা তুলে ধরার সুযোগ আছে এই প্রতিবেদনে। একাধিক মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সাথে সমন্বয় করে তা দ্রুত পাঠানোর উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব।

মাসুদ বিন মোমেন আরও বলেন, সময়টা যাতে আরও কমিয়ে আনা যায়; ধরেন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গেলো, সেখানে ওইটা আবার যাচাইবাচাই হলো তিনদিন। সেখানে আবার চেঞ্জ হলো। সেখানে আবার চারদিন। তো এরমধ্যে পাঁচ-সাতদিন চলে যায়। এজন্য লাস্টের দিকে প্রায় যখন তৈরি হয়ে যায়, তখন অতিরিক্ত ৮-১০ দিন লাগায় ডেডলাইন মিট করতে একটু কষ্ট হয়। এ সমস্ত জটিলতাগুলোয় বা সমন্বয়ে আরও উন্নতি দরকার।

গত এক বছরে বাংলাদেশের ৭৬টি গুম-খুনের ঘটনার বিস্তারিত জানতে চায় জাতিসংঘ। তবে, এর কয়েকটির কোনো তথ্যই পায়নি বলে দাবি করছে সরকার।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও একাধিকবার জাতিসংঘকে সময়মতো গুম-খুন-মানবধিকার ইস্যুতে সময়মতো তথ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ।