অনলাইন ডেস্ক:
মুসলিমদের নামাজ পড়ার জন্য গুরুদ্বারের দরজা খুলে দিলেন ভারতের গুরুগ্রামের শিখরা। ফলে এখন থেকে প্রতি শুক্রবার সেখানেই জুমার নামাজ আদায় করতে পারবেন স্থানীয় মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
গত দুই মাস ধরে, ডানপন্থী দলগুলো খোলা জায়গায় নামাজ আদায়ে বাধা দিয়ে আসছিল। বিশেষ করে হরিয়ানার গুরুগ্রামের সেক্টর ১২ এলাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মুসলিমদের খোলা জায়গায় নামাজ পড়ার বিরোধিতা করছেন বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা। এরপর গত ৩ নভেম্বরে মুসলিমদের নামাজ আদায়ের জন্য মনোনীত ৩৭টি জায়গার মধ্যে ৮টির মনোনয়ন বাতিল করে গুরুগ্রাম প্রশাসন। জেলা প্রশাসন বিবৃতি দেয়, স্থানীয় জনগণের আপত্তির কারণে প্রার্থনার অনুমতি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গুরদ্বারের গুরু সিং সভা’র সভাপতি শেরদিল সিং সাধু বলেন, “এটা হলো গুরু ঘর। এখানে ভেদাভেদ নেই। সব সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য এখানকার দরজা খোলা। সমস্ত ধর্মের অনুসারীদের প্রার্থনার জন্য প্রাঙ্গণটি ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে। এখানে কোনো রাজনীতি নেই। যেসব মুসলিম ভাইরা জুমার নামাজ পড়তে চান, তাদের জন্য গুরুদ্বারের বেসমেন্ট খুলে দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “মুসলিম সম্প্রদায় স্থানের অভাবে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তাই তারা শুক্রবারের নামাজের জন্য আমাদের গুরুদ্বারের পাঁচটি প্রাঙ্গণ ব্যবহার করতে পারবে। সব ধর্মই এক এবং আমরা মানবতা ও মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাস করি।”
মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা জুমার নামাজ পড়ার জন্য বদ্ধ জায়গার অভাবের কথা উল্লেখ করে অন্যান্য নির্ধারিত স্থানে নামাজ পড়ার জন্য পুলিশি সুরক্ষা চেয়েছিল। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, বারবার হিন্দু সংগঠনের পক্ষ থেকে নামাজ পড়ায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। এতে এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে।
সভার সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেপি সিং বলেন, “তারা ঈশ্বরের একত্বে বিশ্বাসী এবং শিখ সম্প্রদায় সবসময় সবাইকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। সবাইকে তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী গুরুদ্বার প্রাঙ্গনে প্রার্থনা করার জন্য স্বাগত জানাই।”
সভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সভার পাঁচটি গুরুদ্বার প্রাঙ্গণে এক সঙ্গে প্রায় ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার মানুষ প্রার্থনা করতে পারবে।
এর আগে বেশ কিছুদিন ধরেই খোলা জায়গায় নমাজ পড়া নিয়ে আপত্তি তুলেছিল বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠন। এরপরই গুরুগ্রামের সদর বাজার গুরুদ্বার অ্যাসোসিয়েশন মুসলিমদের নামাজের জন্য তাদের জায়গা দিল।
শেরদিল সিং সাধু আরও বলেন, “আমরা সাধারণ বিষয় নিয়ে অশান্তি তৈরি করি না। যারা খোলা জায়গায় নামাজ পড়া নিয়ে আপত্তি করছেন, আমার মনে হয় তাদের এই বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো উচিত। কোনো সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানো উচিত কাজ নয়।”
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।