আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার):
দীর্ঘদিন সাড়ে সাত বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন জাহাজ চলাচলে অনুমতি দিয়েছেন। তবে এটি পরীক্ষামূলক। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটের অভিজাত জাহাজ কেয়ারি ট্যুরস এন্ড লিমিটেড এর টেকনাফের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, করোনা, জেটি সংস্কারসহ বিভিন্ন অজুহাতে প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় পর্যটক মৌসুম শুরু হলেও জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে এ মাসে আরো জাহাজ চলবে। তবে মৌসুমের প্রথম মঙ্গলবার থেকে এ রুটে শুধু কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইনকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে অন্যান্য জাহাজগুলো চলাচল করবে। নৌ-মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসনও অনুমতি দিয়েছে। এতে করে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ চলাচলে আর কোনো বাধা রইল না। তিনি আরো জানান, টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট হয়ে নিয়মিত পথেই জাহাজগুলো চলাচল করবে। এদিকে সেন্টমার্টিনে দীর্ঘদিন জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় হোটেল-মোটেল কর্মচারীরা অভাবে দিনাতিপাত করছিল। অবশেষে অনুমতি নিয়ে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচলের সংবাদ পেয়ে আনন্দিত হয়েছেন সেন্টমার্টিনদ্বীপের বাসিন্দাগণ। অপরদিকে পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারী সিন্দাবাদ সেন্টমার্টিনে পৌছলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড, মেম্বারসহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা পর্যটকদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বছরের পর্যটন মৌসুমের শুরুতে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ব্যবসায়ীদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন পেয়েছেন এই বছরের প্রথম জাহাজে করে আসা পর্যটকরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় টেকনাফের কেয়ারী ঘাটের নিজস্ব জেটি থেকে ৩ শতাধিক পর্যটক নিয়ে কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন জাহাজটি দুপুর ১২টায় সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌছায়। জাহাজ আসার খবর শুনে দ্বীপের অধিকাংশ লোকজন পর্যটকদের স্বাগত জানাতে জেটিঘাটে জড়ো হয়। দ্বীপবাসী অত্যান্ত সুন্দর ও ভদ্রতার সহিত পর্যটক, ট্যুরিজম ব্যবসায়ী, জাহাজ পরিচালনাকারীসহ যারা টেকনাফ থেকে কেয়ারী ক্রুজ করে সেন্টমার্টিন গেছেন সবাইকে আন্তরিক ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ।
স্থানীয় মেম্বার হাবিবুর রহমান হাবিব খাঁন আক্ষেপ করে বলেন, কত মন্ত্রী-এমপি স্বপ্নের সেন্টমার্টিন এসে ঘুরে যায়। কিন্তু দু:খের বিষয় জেটির ভাঙাচোরা করুন দৃশ্য পর্যটকদের মাঝে চরম হতাশায় ফেলে দেয়। এ করুন দৃশ্য দেখে দ্বীপবাসীও মর্মাহত। অনতিবিলম্বে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ভাঙা জেটি পুর্নাঙ্গ জেটি নির্মাণ করা হোক কোন ধরনের দুর্ঘটনা যেন না ঘটে।
এখন অতিরিক্ত মানুষ আসার ফলে জোড়াতালির জেটি যে কোন মুহুর্তে ধ্বসে যেতে পারে।
বছরের প্রথম জাহাজ ছাড়ার আগেই সকাল থেকে পর্যটকদের সমস্যা ও জাহাজ কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছে কিনা তদারকি করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. পারভেজ চৌধুরী।
তিনি বলেন, কোনভাবেই পর্যটক হয়রানি বরদাশত করা হবেনা। অতিরিক্ত যাত্রী বহন করলে সাথে সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন জাহাজকে পরীক্ষামূলক পাঠানো হয়েছে। জেটির অবস্থা বুঝে আবেদনকৃত বাকি জাহাজ গুলোকে অনমুতি দেয়া হবে।