সিবিএন ডেস্ক:
সুদ কারবারি ব্যক্তি এবং অনিবন্ধিত ও অনুমোদনবিহীন ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিকে (এমআরএ) ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের লিখিত অনুলিপি বুধবার (৬ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে।

লিখিত আদেশের অনুলিপি প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আদালত বলেছেন, ব্যক্তি পর্যায়ে সুদ কারবারির কোনো সুযোগ নেই। কেউ এভাবে ব্যবসা করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আদেশে অনিবন্ধিত বা অননুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠনে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্তে কোনো অননুমোদিত বা অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক সেগুলো বন্ধ করে আইনি ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে চড়া সুদে ঋণদানকারী স্থানীয় মহাজন ও ঋণদানকারী স্থানীয় সুদকারবারিদের তালিকা দিতে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের আদেশ প্রতিপালন করে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এসব বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

ক্ষুদ্র ঋণের নামে সারাদেশে চড়া সুদে ঋণদাতা মহাজনদের চিহ্নিত করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।

একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চড়া সুদে ঋণের জালে কৃষকেরা’ শিরোনামে গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক ওই রিট দায়ের করেন। রিটে মহাজনদের উচ্চহারে অনানুষ্ঠানিক ঋণ প্রদান নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়া হয়। আবেদনে অর্থ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ১৩৬ ব্যক্তিকে বিবাদী করা হয়েছিল।