সিবিএন ডেস্ক:
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ভাসানচরে মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। আগামী শনিবার এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন। বাংলাদেশের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতিসংঘের পক্ষে ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। এর ফলে ভাসানচর রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কক্সবাজারের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে ইউএনএইচসিআর।

কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার ব্যাপারে শুরু থেকেই আপত্তি তুলেছিল জাতিসংঘ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ভাসানচর কতটা ঝুঁকিমুক্ত, রোহিঙ্গাদের অবাধে ভাসানচর থেকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত, তাদের স্বেচ্ছায় ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে কি না, এ বিষয়গুলো নিয়ে জাতিসংঘের প্রশ্ন ছিল।

সরকার কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের কাজ শুরু করে অব্যাহত রাখার একপর্যায়ে সেখানে একটি কারিগরি দল পাঠায় জাতিসংঘ। কাছাকাছি সময়ে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি), ঢাকায় পশ্চিমাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের পর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) দুই সহকারী হাইকমিশনার ভাসানচর সফর করেন। এসব সফরের পর জাতিসংঘের কারিগরি দলসহ প্রতিনিধিদল ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখায়।

দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর গত জুনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ায় রাজি হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহসীন বলেন, শনিবার ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সরকারের এই সমঝোতা স্মারক সই হবে। ভাসানচরে ইতোমধ্যে প্রায় ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ হাজার নিয়ে যাব। এ ব্যাপারে ইউএনএইচসিআর আগে যেভাবে কাজ করেছে, একইভাবে কাজ করে যাবে, এ নিয়ে সমঝোতা স্মারক হবে। আশা করি, অক্টোবরের শেষ দিকে কাজ শুরু করব। ভাসানচরে এক লাখের অ্যাকোমোডেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। আপাতত এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে এবং তারও আগে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে এখন ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়ে রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের এই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আপাতত এক লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।